পাতা:শিখ-ইতিহাস.djvu/৩৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ইংরাজদিগের সহিত যুদ্ধ OOS পুরোভাগস্থিত বিপক্ষপক্ষীয় সকলগুলি কামানই অধিকার করিয়া লইল । বৃটিশ সৈন্যের দ্বিতীয় দলের এই অভাবনীয় পৃষ্ঠ-প্রদর্শনে, এবং প্রথম দলের ঘোরতর যুদ্ধাভিযানে হয়তো কোন প্রত্যক্ষবাদী স্বতঃই বিজয়লাভের পরিবর্তনশীল বিভিন্ন কারণ ও অবস্থাপরম্পরার বিষয় চিন্তা করিতে প্রবৃত্ত হইতে পারেন। কিন্তু সেনায়কবৃন্দ সকলেই সমবেত হইয়া, ক্ষিপ্রকারিতা অবলম্বন করিয়াছিলেন। আলিওয়ালের যুদ্ধে বিজয়ী সৈন্যগণ, দক্ষিণপার্থে থাকিয় তাহাদের সম্মুখভাগস্থিত শিখসৈন্যদিগকে আক্রমণ করিতে উদ্বুদ্ধ হইয়াছিল। অন্যান্য সমস্ত অংশ আক্রাস্ত হওয়ায়, নির্ভীক বীরপুরুষ সকলেই ধ্বংসমুখে পতিত হইল। স্থানে স্থানে স্তুপাকারে মৃত সৈনিকদল পতিত হইল ; প্রথমশ্রেণী, দ্বিতীয়শ্রেণীর উপর পড়িল । এই দ্বিতীয় সৈন্যদল নিভিক-চিত্তে বিপক্ষ বৃটিশ সৈন্য আক্রমণের জন্য অগ্রসর হইতেছিল। এক্ষণে বৃটিশ-সৈন্যের দুইটি দল একত্র মিশিয়া গেল ; পরিশেষে বৃটিশ সৈন্য বিশৃঙ্খলভাবে ভীমবেগে বিপক্ষদলকে আক্রমণ করিতে লাগিল, তখন দ্বিতীয় সৈন্যদল তাহাদের লুপ্ত-খ্যাতির পুনরুদ্ধার সাধন করিল ; বিপক্ষ শিখদিগের শিবির মধ্যে জলস্রোতের ন্যায় বৃটিশ অশ্বারোহী আসিয়া পতিত হইল ; তাহারা বামপাশ্ব হইতে আসিয়া অগ্রবর্তী সৈন্যের সহিত যোগদান করিল ; সুতরাং পরিশ্রাস্তু ইংরাজ পদাতিক সৈন্য অপেক্ষ তাহাদের সৈন্যবল অনেকাংশে বৃদ্ধি হইল। এইরূপে শিখদিগের দুর্গ পরিধার সর্বত্রই উন্মুক্ত হইল। বৃটিশ সৈন্যের গোলাগুলির আঘাতে দুর্গের সর্বত্রই ভগ্ন হইয়াছিল। কিন্তু সুসজ্জিত কামানশ্রেণী পরিচালক শিখ-সৈন্য তখনও বগুত-স্বীকার করিল না । দুর্গাভ্যস্তরে বহুতর সাহসী সৈন্য দৃষ্টগোচর হইল ; তাহারা প্রতি বিপৎপাতেই প্রত্যেক বাধা-বিয়ে অবসর বুঝিয়া হযোগ অনুসন্ধান করিত ;–তাহা হইতে সেই সকল বীরপুরুষ লভ্য অনুসন্ধান করিত। এমন কি, স্বচ্যগ্র-প্রমাণ ভূমিখণ্ডের জন্যও তাহারা ঘোর যুদ্ধে প্রবৃত্ত হইতে কুণ্ঠ বোধ করিত না । বস্তুত:, দেশদ্রোহী বিশ্বাসঘাতক তেজ সিং উত্তেজনা-বহির অনলস্রোত প্রবাহিত করিয়া, আপনার দক্ষিণ পার্শ্বস্থিত সৈন্যগণের হতাশ-হৃদয়ে বলসঞ্চার করেন নাই। তিনি প্রথম আক্রমণেই পলায়ন করিয়াছিলেন। হয় আকস্মিক ঘটনাবশতঃ, না হয় স্বেচ্ছাপূর্বক, তেজ সিং শতদ্রু-নদী নৌ-সেতুর মধ্যভাগস্থিত একখানি নৌকা ডুবাইয়া দিয়াছিলেন। বৃদ্ধ প্রাচীন খাম সিং আপনার প্রতিজ্ঞ বা ব্রতের কথা কখনও বিস্তুত হন নাই । তিনি শুভ্রবর্ণের সামান্য একটি পোষাক পরিধান করিলেন ; বোধ হইল, তিনি যেন মৃত্যুর জন্য জীবন উৎসর্গ করিয়াছেন। অতঃপর শুাম সিং, গুরুধর্ম রক্ষার জন্য সকলকেই প্রাণপণে যুদ্ধ করিতে .অম্বরোধ করিলেন, তিনি তাহাদিগকে বলিলেন, সাহসী বীরপুরুষকেই গুরু গোবিন্দ অবিমিশ্র নিত্য-স্বখের অধিকারী বলিয়া নির্দেশ করিয়াছেন। এইরূপ উৎসাহ বাক্যে শুমি সিং বিধ্বস্ত সৈন্যদিগকে পুনর্মিলিত করিলেন ; পরিশেষে স্বদেশ-প্রাণ বৃদ্ধ খাম