পাতা:শিখ-ইতিহাস.djvu/৪২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পিখ-ইতিহাস ט) ו"כ) অবধারণের জন্য ব্যস্ত হইলেন। তখন সকলেই এক বাক্যে অভিমত প্রকাশ করিলেন,— এ অবস্থায় মূলতান অবরোধ সম্ভবপর নহে। স্বতরাং আক্রমণকারী সৈন্যদল নগরপ্রাকারের সন্নিকটে উপস্থিত হইয়াও প্রত্যাবৃত্ত হইতে আদিষ্ট হইল । হয় তো অল্পক্ষণ মধ্যেই নগর ধ্বংস হইত ; কিন্তু সে আশা এক্ষণে স্বদুরপরাহত হইয়া পড়িল । অতঃপর, সেনাপতির নিকট হইতে পুনরায় সাহায্যাৰ্থ সৈন্যদল আসিয়া উপস্থিত হওয়া পর্যন্ত, ইংরেজ-পক্ষ “তিৰ্ব্বি’ নামক স্থানে সেনানিবাস স্থাপন করিয়া অবস্থান করিতে বাধ্য হইলেন । এদিকে শের সিংহ সসৈন্তে মূলতানে উপস্থিত হইয়া মূলরাজের সহিত সাক্ষাৎ করিলেন। দলপুষ্ট হইল বলিয়া, মূলরাজের আনন্দের আর অবধি রহিল না। তবে মূলরাজ কিন্তু শের সিংহের উপর সম্পূর্ণরূপ বিশ্বাসস্থাপন করিতে পারিলেন না। দুর্গে শের সিংহের আশ্রয় হইল না ; দুর্গের বাহিরে সহরের মধ্যে র্তাহাদের জন্য স্বতন্ত্র আবাস নির্দিষ্ট হইল। অধিকন্তু নগরের বহিভাগে এক মন্দির-মধ্যে লইয়া গিয়া মূলরাজ শের সিংহকে এবং তাহার কর্মচারীগণকে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ করাইলেন । এইরূপ নানাকারণে শের সিংহ এবং মূলরাজের মধ্যে মিলন হইল না। তখন, মূলতানে আর অবস্থিতি করা যুক্তিযুক্ত নহে মনে করিয়া, শের সিংহ তাহার পিতার সাহায্যাৰ্থ হাজের প্রদেশে যাইতে চাহলেন ; জানাইলেন,—মূলরাজ যদি তাহার সৈন্যগণের কিছুদিনের বেতন অগ্রিম প্রদান করিতে পারেন, তাহা হইলে, নূতন দেশে গিয়া তিনি এক নূতন শিখ-যুদ্ধের অবতারণা করেন। এ প্রস্তাব মূলরাজের নিকট সমীচীন বলিয়া বোধ হইল। নূতন সমরানল প্রজ্বলিত করিবার জন্য, ৯ই অক্টোবর শেষ সিংহ পিতার নিকট যাত্রা করিলেন। ১৪ই সেপ্টেম্বর মুলতান হইতে ইংরেজ সৈন্য প্রত্যাবৃত্ত হয়। ১৭ই ডিসেম্বর পুনরায় তাহারা মুলতান আক্রমণে অগ্রসর হইল। মধ্যে প্রায় তিন মাস কাল উভয় পক্ষই আপনাপন দলপুষ্টির এবং অস্ত্রশস্ত্র সংগ্রহের আয়োজনে উদ্যোগী ছিলেন। ইংরেজের পক্ষে অনেক নূতন সৈন্য আসিয়া উপস্থিত হইয়াছিল,—কামান বন্দুক চালাইবার অনেক নূতন পথ আবিষ্কৃত হইয়াছিল। মূলরাজও সে পক্ষে উদাসীন ছিলেন না। নগর এবং উপনগরের দৃঢ়তা সম্পাদনে তিনি বিশেষরূপ চেষ্টা করিয়াছিলেন। অধিকন্তু তাহার কতকগুলি সৈন্য শের সিংহের সঙ্গে হাজেরায় চলিয়া যাওয়ায়, নূতন সৈন্যদল সংগ্ৰহ করিয়া সেই সৈন্যদলের অভাব পূরণকল্পেও র্তাহার চেষ্টার ক্রটি ছিল না। এই সময়ে পারিপার্থিক মিত্র রাজন্তবর্গের নিকট হইতে অর্থ-সংগ্রহের চেষ্টা চলিয়াছিল। রাজ-নৈতিক তীক্ষ্ববুদ্ধির ফলে এই সময়ে মূলরাজ কাবুলের দোস্ত মহম্মদ এবং কান্দাহারের সর্দারদিগকেও বশীভূত করিবার চেষ্টা করিয়াছিলেন। র্তাহাদিগের নিকট প্রস্তাব করিয়া পামুইয়াছিলেন,—“আপনার আস্থন ; আমার সহায় হউন ; আমরা সমবেত চেষ্টায় ফিরিদীদিগকে দেশ হইতে দূর করিয়া দিই। যদি তাহাদিগকে দূর করিতে পারি, তাহ হইলে সিন্ধু নদের উভয় পার্থে উভয়ের সীমানা নির্দিষ্ট থাকিবে ।" বলা বাহুল্য, মূলরাজের এ উদ্দীপনা ব্যর্থ হয় নাই। তাহার সহিত সম্মিলিত হইতে না পারিলেও,