পাতা:শিখ-ইতিহাস.djvu/৪৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গুরু গোবিন্দের ধর্মপ্রচার পদ্ধতি २७. অজুন গুরুপদে প্রতিষ্ঠিত হন। তাহার মৃত্যুর পর পর্যায়ক্রমে,—হর গোবিন্দ, হর রায়, হরকিযেণ এবং তেগ বাহাদুর, শিখদিগের গুরুপদ প্রাপ্ত হইয়াছিলেন । র্তাহার প্রত্যেকেই ধর্মের জন্য দিল্লীতে প্রাণ বিসজন দিয়াছেন ; মুসলমানগণ র্তাহাঁদের সকলেরই প্রাণ সংহার করিয়াছে। “ষষ্ঠ অধ্যায়” (মর্ম ) —যেখানে পাণ্ডুবংশীয়গণ রাজত্ব করিতেন, সেই সপ্ত স্করিজী বা গিরিশৃঙ্গের সন্নিকটে ‘ভীমকুও নামক স্থানে, গুরু গোবিন্দ সিংহের মুক্ত (অশরীরি) আত্মা ঈশ্বরোপাসনায় রত ছিল। পরিশেষে গোবিন্দের সামুনয় প্রার্থনায়, তাহার আত্মা জগদীশ্বরে বিলীন হইয়া গেল। (তাহার মুক্তিলাভ হইল ;–র্তাহাকে আর এ পৃথিবীতে আসিয়া দেহধারণ করিতে হইল না। ) গুরুর ন্যায় গুরুর পিতা-মাতাও সদা সর্বদা ঈশ্বরকে উপাসনা করিতেন ; ঈশ্বর তাহাদের প্রতিও কৃপা-কটাক্ষপাত করিলেন। পরিশেষে জগদীশ্বর সেই সপ্ত গিরিশৃঙ্গ হইতে গোবিন্দের আত্মাকে আনয়ন করিয়া, মানব দেহ ধারণের জন্য আত্মার প্রতি আদেশ করিলেন। এ পৃথিবীতে অবতীর্ণ হওয়ার ইচ্ছা আমার আদোঁ ছিল না, ঈশ্বর চরণে আমার মন গভীর ধ্যান মগ্ন ছিল ; কিন্তু জগদীশ্বর পরিশেষে তাহার মনোভাব ব্যক্ত করিলেন । ঈশ্বর বলিলেন,—“যখন মানুষের স্বষ্টি হয়, তখন পাপী ব্যক্তিদিগের শাস্তি বিধানের জন্য দৈত্যগণ পৃথিবীতে প্রেরিত হইয়াছিল । কিন্তু দৈত্যগণ প্রভূত বলশালী হইয়া উঠিয়া, তাহারা ঈশ্বরকে বিস্তৃত হইল। অতঃপর দেবতাগণের জন্ম হয় ; কিন্তু তাহার, শিব, ব্ৰহ্মা এবং বিষ্ণু প্রভৃতি দেহ ধারণ করিয়া মানবজাতির মধ্যে আপনাপন পূজার প্রথা প্রবর্তিত করেন। অতঃপর সিদ্ধগণ জন্মগ্রহণ করেন ; তাহারা ভিন্ন পথ অনুসরণ করিয়া বিভিন্ন সম্প্রদায়ের স্বষ্টি করিলেন। পরিশেষে গোরক্ষনাথ পৃথিবীতে অবতীর্ণ হন ; বহুসংখ্যক রাজা তাহার শিষ্যত্ব গ্রহণ করে। এইরূপে তৎকর্তৃক ‘যোগী" নামে একটি সম্প্রদায় প্রতিষ্ঠিত হয়। গোরক্ষনাথের পর, রামানন্দের আবির্ভাব। তিনি আপনার প্রথা অনুসারে “বৈরাগী” নামক একটি সম্প্রদায় প্রতিষ্ঠা করেন। তারপর মহম্মদের জন্ম হয়। তিনি সমগ্র আরবের অধিপতি হইয়াছিলেন। তৎকর্তৃক একটি ধর্ম-সম্প্রদায় প্রতিষ্ঠিত হয়, এবং শিষ্যগণকে তিনি র্তাহার নাম উচ্চারণ করিতে উপদেশ প্রদান করেন। এক্ষণে স্পষ্টই বুঝা গেল, মানবজাতিকে সৎপথে পরিচালিত করার জন্ত বাহাদিগকে পৃথিবীতে পাঠান হইল, তাহারা সকলেই কুসংস্কারের বশবর্তী হইয়া, তখায় আপনাপন প্রথা প্রবর্তন করিল, এবং সেই সকল কু-প্রথার অনুসরণে মানবজাতি কু-পথে পরিচালিত হইতে লাগিল। অজ্ঞ নির্বোধ মানুষকে কেহই সৎপথ প্রদর্শন করিত না,