পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস প্রথম খণ্ড.djvu/৩৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তামস যুগ। ૨૭8 অত্যাচারের ভয়ে হিন্দুগণ পশ্চিমবঙ্গ ছাড়িয়া জঙ্গলাকীর্ণ সমতটে বা হিন্দুশাসিত নদীবহুল পূৰ্ব্ববঙ্গে পলায়ন করিতে লাগিল। বৌদ্ধের মঠ ছাড়িয়া পলাইত না, মঠগুলি অনেক সময়ে প্রাচীন রাজধানীর নিকটে অবস্থিত ছিল, এজন্ত বৌদ্ধদিগের উপর মুসলমানের অত্যাচার অধিক পড়িয়াছিল। কতক নিহত হইত, কতক সৰ্ব্বস্বাস্তু হইয়া মুসলমান ধৰ্ম্ম গ্রহণ করিত। আর যে সকল নিম্নশ্রেণীর জাতির দূরদেশে যাইবার সংস্থান ছিল না, তাহারাও মুসলমান হইত, মুসলমানী কথা কহিত, মুসলমানী সাজে সাজিত, কিন্তু ধর্মের বিশেষ ধার ধারিত না। পূৰ্ব্বেও যে ভাবে অন্নসংস্থান করিত, পরেও তাঁহাই করিতে লাগিল। . বৌদ্ধের যে সকলেই মঠে বাস করিত, সংসারধৰ্ম্মত্যাগী ছিল, তাহা নহে। অনেক গৃহস্থ বৌদ্ধ বুদ্ধপ্রচারিত সারনীতির মৰ্ম্ম জানিত না, তাহার বিকৃত মতের পক্ষপাতী হইয়া সন্ধৰ্ম্ম ত্যাগ করিয়া ধৰ্ম্মের পূজা করিত। এই ধৰ্ম্মপূজক বৌদ্ধগণ পাঠানের হস্তে এমন ভাবে নিৰ্য্যাতন ভোগ করিতেছিল, যে অবশেষে তাহারা প্রাণের দায়ে পাঠানের পক্ষাৰলম্বন করিয়া তাহদের যাশোগান করিত। এমন কি তাহারা নবাগত যবনকে ধৰ্ম্মাবতার বলিয়া গ্রহণ করিতেও কুষ্ঠিত হয় নাই। রামাই পণ্ডিত-কৃত শূন্য পুরাণের শেষভাগে নিরঞ্জনের উত্মা” নামক যে একটি ক্ষুদ্র অধ্যায় সম্ভবতঃ পরবর্তী সময়ে প্রক্ষিপ্ত হইয়াছিল, উহাতে এই বিষয়ের একটি মুন্দর বর্ণনা আছে – ধৰ্ম্ম হৈলা জবনরূপি, মাথায়েতে কাল টুপি, হাতে শোভে ত্রিকুচ কামান। চাপিআ উত্তম হয়, ত্রিভুবনে লাগে ভয়, খোদায় বলিয়া এক নাম ॥ নিরঞ্জন নিরাকার, হৈল ভেন্ত অবতার, মুখেত বলেত দম্বদার। যতেক দেবতাগণ, সবে হয়্যা একমন, আনন্দেতে পরিল ইজার। ব্ৰহ্মা হইল মহামদ, বিষ্ণু হৈলা পেকাম্বর, আদম্ব হৈল স্থলপানি। গণেশ হইল গাজী, কাৰ্ত্তিক হৈল কাজি, ফকির হৈলা জত মুনি ॥ * লোকে কথায় বলে “শক্তকে সবাই ভক্ত”, এখানে ধৰ্ম্মভক্তদিগের অবস্থাও তাহাই দাড়াইয়াছিল। পাঠানের “জোর যার, মুল্লুক তার” এই নীতি ঘোষণা করিয়া বাষ্পসিক্ত ৰঙ্গের অধিবাসীদিগকে অশ্রুসিক্ত করিয়া তুলিয়াছিল। দেশীয় লোকের জাতি, প্রাণ ও ভূধিকার রক্ষার জন্ত সৰ্ব্বদা এরূপ চেষ্টা করিত, نمیشدن * সাহিত্যপরিষদ হইতে প্রকাশিত "শুপ্তপুরাণ" ১৪১ পৃঃ