পাতা:রাধারাণী-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ খণ্ড : চতুর্থ পরিচ্ছেদ জামি । কটাক্ষের গুণে নাকি ? অম। না। কটাক্ষ নাই বলিয়া । তুমিও কাণ হইলে আরও সুন্দর হইতে । অামি । সে কথা মিত্রজাকে জিজ্ঞাসা করিব, তোমাকে নহে । সম্প্রতি তুমিও যেমন রজনীকে ভালবাস, আমিও রজনীকে তেমনি ভালবাসি । অম। তুমিও রজনীকে বিবাহ করিতে চাও নাকি ? আমি। প্রায়। আমি নিজে তাহাকে বিবাহ না করি, তাহার ভাল বিবাহ দিতে চাই । তোমার সঙ্গে তাহার বিবাহ হইতে দিব না । অম। আমি স্বপাত্র। রজনীর এরূপ আর জুটিতেছে না। , আমি । তুমি কুপাত্র । আমি মুপাত্র জোটাইয়া দিব । অম। আমি কুপাত্র কিসে ? আমি। কামিজটা খুলিয়া পিঠ বাহির কর দেখি ? অমরনাথের মুখ শুকাইয়। কালো হইয়া গেল। অতি দুঃখিতভাবে বলিল, “ছি । লবঙ্গ ” আমার ছুঃখ হইল, কিন্তু দুঃখ দেখিয়া ভুলিলাম না। বলিলাম, “একটি গল্প বলিব শুনিবে ?” আমি কথা চাপা দিতেছি মনে করিয়া অমরনাথ বলিল, “শুনিব।” আমি তখন বলিতে লাগিলাম, “প্রথম যৌবনকালে লোকে আমাকে রূপবর্তী বলিত—* অ । এটা যদি গল্প, তবে সত্য কোন কথা ? আমি। পরে শোন। সেই রূপ দেখিয়া এক চোর মুগ্ধ হইয়া, আমার পিত্রালয়ে, যে ঘরে আমি এক পরিচারিকা সঙ্গে শয়ন করিয়াছিলাম, সেই ঘরে সিদ্ধ দিল । এই কথা বলিতে আরম্ভ করায়, অমরনাথ গলদঘৰ্ম্ম হইয়া উঠিল। বলিল, “ক্ষমা কর ।” আমি বলিতে লাগিলাম, “সেই চোর সিধপথে আমার কক্ষমধ্যে প্রবেশ করিল। ঘরে আলো জলিতেছিল—আমি চোরকে চিনিলাম । ভীত হইয়া পরিচারিকাকে উঠাইলাম। সে চোরকে চিনিত না। আমি তখন অগত্য, চোরকে আদর করিয়া আশ্বস্ত করিয়া পালঙ্কে বসাইলাম।” অমর। ক্ষমা কর, সে ত সকলই জানি ।