পাতা:মহাত্মা কালীপ্রসন্ন সিংহ.djvu/২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

هولا তাহার পর ইংরাজ শাসনে, রাজনীতিতে, সৰ্ব্ব বিষয়ে যে আদর্শ আনিলেন তাহাও যেমন নূতন, বাঙ্গালীর নিকট তেমনই চিত্তাকর্ষক হইল। ইংরাজ-শাসন ব্যক্তিগতবৈশিষ্ট্যবর্জিত—সমতাহেতু সহজবোধ্য-যন্ত্রবদ্ধ। হিন্দুর ব্যবস্থায় বর্ণভেদে ও মুসলমানের ব্যবস্থায় ধৰ্ম্মভেদে অপরাধীর দণ্ডের তারতম্য ছিল। ইংরাজের ব্যবস্থা সৰ্ব্বতোভাবে সাম্যমূলক। রাজনীতিক্ষেত্রে ইংরাজ প্রজাশক্তির উপর রাজশক্তি প্রতিষ্ঠিত রাখিয়া রাজশক্তির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত প্রজাশক্তির দ্বারা দেশের কাৰ্য্য চালাইবার নূতন আদর্শ আনিলেন; প্রজাশক্তির সহিত রাজশক্তির অসাধারণ সামঞ্জস্ত সংস্থাপনের দৃষ্টান্ত দেখাইলেন। সভায়, সমিতিতে, সংবাদপত্রে, সন্দর্ভে, সমালোচনায় এই নূতন আদর্শ বাঙ্গালীর নিকট পরিচিত হইতে লাগিল। এইরূপে বাঙ্গালীর জীবনে অভিনব ভাবের স্রোত প্রবাহিত হইতে লাগিল। বাঙ্গালীর পক্ষে সে স্রোতের গতিরোধ করা অসম্ভব ছিল। বাঙ্গালী সাদরে সে স্রোতের পথ প্রস্তুত করিয়া দিল । শিক্ষিত বাঙ্গালী পরিচিত পুরাতনকে পরিহার করিয়া নূতনের মোহে মত্ত হইয়া উঠিল-দীনবন্ধুর নিমৰ্চাদের মত ইংরাজীতে স্বপ্ন দেখিবার দুঃস্বপ্ন দেখিতে লাগিল। আহারে, বিহারে, আচারে, ব্যবহারে ইংরাজের অনুকরণ করাই তাহার চরম ও পরম লক্ষ্য হইয়া উঠিল। সমাজে নূতন প্রকারের জাতিভেদ দেখা দিল। কিন্তু অভিজ্ঞতার ফলে অচিরে বাঙ্গালীর ভ্রম ঘুচিল ; বাঙ্গালী বুবিল, বাঙ্গালী “একেবারে ইংরাজ হইয়া বসিলে চলিবে না। বাঙ্গালী কখন ইংরাজ হইতে পারিবে না। বাঙ্গালী অপেক্ষা ইংরাজ অনেক গুণে গুণবান এবং অনেক মুখে সুখী। যদি এই তিন কোটী বাঙ্গালী হঠাৎ তিন কোটা ইংরাজ হইতে পারিত, তবে সে মন্দ ছিল না। কিন্তু