পাতা:মহাত্মা কালীপ্রসন্ন সিংহ.djvu/৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

so ৰছায়া কালীপ্রসন্ন সিংহ । রাখিতে অনুরোধ করি যে, উহাকে সঠিক ইতিহাসের বা আত্মচরিতের হিসাৰে ধরিলে চলিবে না। টিকী কাটা প্রভৃতি অমূলক গল্পের উপর বিশ্বাস স্থাপন করিয়া সহস্ৰ সহস্র পণ্ডিতের পৃষ্ঠপোষক ও আশ্রয়স্থল কালীপ্রসঙ্গের স্মৃতির অবমাননা করিবেন না। ঃ “হুতোমে’র জ্যাঠামোগুলি পরিবর্জন করিলে

  • "অর্থ্য-সম্পাদক শ্ৰীযুক্ত অমূল্যচরণ সেন লিখিয়াছেন –

“একটা জনশ্রুতি আছে যে, কালীপ্রসন্ন অনেক ব্রাহ্মণ পণ্ডিতের টিকি কাটিয়ী দিয়াছিলেন। লোকমুখে এখনও আমরা শুনিতে পাই, টাকা দিয়া কালীপ্রসন্ন ব্রাহ্মণ পণ্ডিতদিগকে বশীভুত করিয়া তাহাদিগের টিকি ক্রয় করিতেন, পরে ঐগুলি কাটিয়া লইয়া আলমারিতে সাজাইয়া রাখতেন; কাহার টিকি কত মূল্যে ক্রীত, তাহাও এক টুকরা কাগজে লিখিত হইয়া ঐ টিকির সঙ্গেই সংলগ্ন থাকিত । এই ঘটনা যে মিথ্যা, তাহা আমরা জানিতে পারিয়াছি। কিন্তু তাহা হইলে কি হয়, এই জনশ্রুতি এতই প্রবল হইয়। উঠিয়ছিল যে, কলিকাতায় তিনি “টিকি কাট৷ জমিদার” আখ্যা লাভ করিয়াছিলেন। বাস্তবিক সে সময়ে “টিকি কাটা জমিদার” বলিলে লোকে উহাকেই বুঝিত। যাহা হউক, এই আধ্যার মূলে যে কতকটা সত্য না ছিল, এমন কথাও আমরা বলিতে পারি না। ব্যাপারটা এইরূপ ঘটিয়াছিল। একবার কালীপ্রসঙ্কের বাটীতে কোন ব্রতোপলক্ষে এক ব্রাহ্মণকে একটী গাভীদান করা হইয়াছিল। ব্রাহ্মণ গাভী লইয়। যাইতে যাইতে পথেই উহা কসাইকে বিক্রয় করে। ঘটনা কালীপ্রসম্নের গোচরীভূত হইলে তিনি সেই ব্রাহ্মণকে বাটতে ডাকিয়া আনেন এবং স্বহস্তে তাহার টিকি কাটিয়া লয়েন। এই ঘটনাই ক্ৰমশঃ অতিরঞ্জিত হইয়া এইরূপ জনশ্রুতিতে পরিণত হয় যে, কালীপ্রসন্ন ব্রাহ্মণ পণ্ডিতের টিকি কাটিয়া থাকেন। বস্তুতঃ তিনি যে এইরূপ এক জন নীচাশয় ব্রাহ্মণের শিখা কৰ্ত্তন করিয়াছিলেন বলিয়াই, সকল ব্রাহ্মণ পণ্ডিতের উপর শ্রদ্ধাহীন ছিলেন, এইরূপ কখনই সম্ভবপর নহে। পক্ষান্তরে, প্রকৃত ব্ৰাহ্মণপণ্ডিতগণকে যে তিনি অতি ভক্তি করিতেন, এ বিষয়ে সঙ্গেহ নাই।”-অৰ্ঘ্য, অগ্রহায়ণ, ১৩১৮ ।