শ্ৰীকান্ত ছটার বিভ্রান্ত হইয়া এই মহামান্ত ব্যক্তিটিকে ভাড়া করিয়াছিল। এতটা আসিয়াও আত্মরক্ষার কোন উপায় খুজিয়া না পাইয়া অবশেষে তিনি জলে বাপ দিয়া পড়িয়াছিলেন ; এবং এই দুৰ্দ্দান্ত শীতের রাত্রে তুষারশীতল জলে আকণ্ঠ মগ্ন থাকিয়া এই অৰ্দ্ধান্টাকাল ব্যাপিয়া পুৰ্ব্বকৃত পাপের প্রায়শ্চিত্ত করিতেছিলেন। কিন্তু প্রায়শ্চিত্তের ঘোর কাটাইয়া তাহাকে চাঙ্গা করিয়া তুলিতেও সে রাত্রে আমাদিগকে কম মেহনত করিতে হয় নাই। কিন্তু সবচেয়ে আশ্চৰ্য্য এই যে, বাবু ডাঙায় উঠিয়াই প্রথম কথা কহিলেন, আমার একপাটি পাম্প ? সেটা ওখানে পড়িয়া আছে—সংবাদ দিতেই, তিনি সমস্ত দুঃখ ক্লেশ বিস্বত হইয়া, তাহা অবিলম্বে হস্তগত করিবার জন্ত সোজা খাড়া হইয়া উঠিলেন। তার পরে কোটের জন্য, গলাবন্ধের জন্য, মোজার জন্ত, দস্তানার জন্য একে একে পুনঃ পুনঃ শোক প্রকাশ করিতে লাগিলেন, এবং সে রাত্রে যতক্ষণ পৰ্য্যন্ত না ফিরিয়া গিয়া নিজেদের ঘাটে পৌছিতে পারিলাম ; ততক্ষণ পর্যাস্ত কেবল এই বলিয়া আমাদের তিরস্কার করিতে লাগিলেন –কেন আমরা নিৰ্ব্বোধের মত সে সব তাহার গা হইতে তাড়াতাড়ি খুলিতে গিয়াছিলাম। না খুলিলে ত ধুলাবালি লাগিয়া এমন করিয়া মাটি হইতে পারিত না। আমরা খোট্টার দেশের লোক, আমরা চাষার সামিল, আমরা এসব কখনো চোথ খে দেখি নাই—এই সমস্ত অবিভ্রান্ত বকিতে বকিতে গেলেন। যে দেহটাতে ইতিপূৰ্ব্বে একটি ফোটা জল লাগাইতেও তিনি ভয়ে সারা হইতেছিলেন জামা-কাপড়ের শোকে সে দেহটাকেও তিনি বিস্মৃত হইলেন। উপলক্ষ যে আসল বস্তুকেও কেমন করিয়া বহুগুণে অতিক্রম করিয়া যায়, তাহ। এইসব লোকের সংসর্গে না আসিলে, এমন করিয়া চোখে পড়ে না । রাত্রি ছুটোর পর আমাদের ডিঙি আসিয়া ঘাটে ভিড়িল । আমার ষে র্যাপারখানির বিকট গন্ধে কলিকাতার বার ইতিপূৰ্ব্বে মুস্থিত হইতেছিলেন, সেইখানি গায়ে দিয়া, তাহারই অবিশ্রাম নিনা করিতে করিতে—পা মুছিতেও ঘৃণা হয়, তাহ পুনঃ পুনঃ শুনাইতে শুনাইতে ইক্সর খানি পরিধান করিয়া তিনি সে-যাত্রা আত্মরক্ষা করিয়া বাট গেলেন । যাই হোক, তিনি যে দয়া করিয়া ব্যাঘ্রকবলিত না হইয়া সশরীরে প্রত্যাবৰ্ত্তন করিয়াছিলেন, তাহার এই অনুগ্রহেঞ্জ আনলেই আমরা পরিপূর্ণ হইয়া গিয়াছিলাম। এত উপত্রব-অত্যাচার হাসিমুখে গন্ধ করিয়া আজ নৌকা চড়ার পরিসমাপ্তি করিয়া, এই দুর্জয় শীতের রাত্রে ক্টোচার খুটমাত্র অবলম্বন করিয়া কঁাপিতে কঁাপিতে বাটা ফিরিয়া গেলাম। Čeč ? R--a
