পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (প্রথম সম্ভার).djvu/৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ আমি কথা কহিলাম না। প্রতিবাদ করিয়া কাহারো ভুল ভাঙ্গিবীর মত মনের অবস্থা আমার ছিল না। আচ্ছন্ন, অভিভূতের মত নিশাৰ পথ চলিতে লাগিলাম। কিছুদূর আসার পর রতন প্রশ্ন করিল, আজ কিছু দেখতে পেলেন, বাবু ? আমি বলিলাম, না । আমার এই সংক্ষিপ্ত উত্তরে রতন ক্ষুব্ধ হইয়া কহিল, আমরা যাওয়ায় আপনি কি রাগ করেচেন বাৰু? মার কান্না দেখলে কিন্তু— আমি তাড়াতাড়ি বলিয়া উঠিলাম, না রতন, আমি একটুও রাগ করিনি। তাৰুর কাছাকাছি আসিয়া চৌকিদার তাহার কাজে চলিয়া গেল। গণেশ, ছট লাল চাকরদের তাবুতে প্রস্থান করিল। রতন কহিল, মা বলেছিলেন যাবার সময় একটিবার দেখা দিয়ে যেতে | থমকিয়া দাড়াইলাম। চোখের উপর যেন স্পষ্ট দেখিতে পাইলাম, পিয়ারী দীপের সম্মুখে অধীর আগ্রহে, সজলচক্ষে বসিয়া প্রতীক্ষণ করিয়া আছে, এবং আমার সমস্ত মনটা উন্মত্ত উৰ্দ্ধশ্বাসে তাহার পানে ছুটিয়া চলিয়াছে । রতন সবিনয়ে ডাকিল, আমুন। মুহূৰ্ত্তকালের জন্য চোখ বুজিয়া নিজের অস্তরের মধ্যে ডুব দিয়া দেখিলাম, সেখানে প্রকৃতিস্থ কেহ নাই! সবাই আকণ্ঠ মদ খাইয়। মাতাল হইয়া উঠিয়াছে ! ছি, ছি! এই মাতালের দল লইয়া যাইব দেখা করিতে ? সে আমি কিছুতেই পারি না । বিলম্ব দেখিয়া রতন বিস্মিত হইয়া কহিল, ওখানে অন্ধকারে দাড়ালেন কেন বাবু— আম্বন ? * আমি তাড়াতাড়ি বলিয়া ফেলিলাম, না রতন, এখন নয়—আমি চললুম। রতন ক্ষুণ হইয়া কহিল, ম৷ কিন্তু পথ চেয়ে বসে আছেন— পথ চেয়ে ? তা হোকৃ! তাকে আমার অসংখ্য নমস্কার দিয়ে বোলো, কাল যাবার আগে দেখা হবে—এখন নয় ; আমার বড় ঘুম পেয়েছে রতন, আমি চললুম! বলিয়া বিস্মিত, ক্ষুব্ধ রতনকে জবাব দিবার সময়মাত্র না দিয়া দ্রুতপদে ওদিকের তাবুর দিকে চলিয়া গেলাম । જે মানুষের অস্তুর জিনিসটিকে চিনিয়া লইয়া, তাহার বিচারের ভার অন্তৰ্য্যামীর উপর না দিয়া মানুষ যখন নিজেই গ্রহণ করিয়া বলে, আমি এমন, আমি তেমন, এ কাজ আমার দ্বারা কদাচ ঘটিত না, সে কাজ আমি মরিয়া গেলেও ԵրԵ