পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (প্রথম সম্ভার).djvu/১৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

यज्जलेिनेि স্বরেন্দ্রনাথ ফটকের কাছে আপিল । একবার দাড়াইল, আবার পিছাইয়া গেল, আবার ফিরিয়া আসিল—আবার ফিরিয়া গেল। সেদিন আর কিছু হইল না। পরদিনও ঐরূপ করিয়া কাটিল। দুই দিন ধরিয়া সে ফটকের নিকট উমেদারি করিয়া তৃতীয় দিবসে অপেক্ষাকৃত সাহস সঞ্চয় করিয়া ভিতরে প্রবেশ করিল। সম্মুখে একজন ভৃত্য দাড়াইয়া ছিল । সে জিজ্ঞাসা করিল, কি চান ? বাবুকে— বাবু বাড়ি নেই। স্বরেন্দ্রনাথের বুকখানা আনন্দে ভরিয়া উঠিল—একটা নিতান্ত শক্ত কাজের হাত হইতে সে পরিত্রাণ পাইল। বাবু বাড়ি নাই। চাকরির কথা, দুঃখের কাহিনী বলিতে হইল না, ইহাই তাহার আনন্দের কারণ । তখন দ্বিগুণ উৎসাহে ফিরিয়া গিয়া, দোকানে বসিয়া পেট ভরিয়া খাবার খাইয়া খানিকক্ষণ সে মনের আনন্দে ঘুরিয়া বেড়াইল, এবং মনে মনে রীতিমত আলোচনা করিতে লাগিল যে, পরদিন কেমন করিয়া কথাবার্তা কহিতে পারিলে তাহার নিশ্চিত একটা কিনারা হইয়া যাইবে । পরদিন কিন্তু উৎসাহটা তেমন রহিল না। বাটীর যত নিকটবৰ্ত্তী হইতে লাগিল, ততই তাহার ফিরিয়া যাইবার ইচ্ছা হইতে লাগিল। ক্রমে ফটকের নিকট আসিয়া একেবারে সে দমিয়া পড়িল—পা আর কোন মতেই ভিতরে যাইতে চাহে না । আজ তাহার কিছুতেই মনে হইতেছে না যে, সে নিজের কাজের জন্যই নিজে আসিয়াছে—ঠিক মনে হইতেছিল, যেন জোর করিয়া আর কেহ তাহাকে পাঠাইয়া দিয়াছে। কিন্তু দ্বারের কাছে সে আর উমেদারি করিবে না, তাই ভিতরে আসিল। সেই ভৃত্যটার সহিত দেখা হইল। সে বলিল, বাবু বাড়ি আছেন, দেখা করবেন কি ? ई । তবে চলুন। এটা আরও কঠিন! জমিদারবাবুর প্রকাণ্ড বাড়ি। রীতিমত সাহেব ধরনের সাজান আসবাব-পত্র। কক্ষের পর কক্ষ, মারবেল-প্রস্তরের সোপানাবলী, বড়-লণ্ঠন লাল-কাপড়ে ঢাকা প্রতি কক্ষে শোভা পাইতেছে, ভিত্তি-সংলগ্ন প্রকাণ্ড মুকুর, কত ছবি, কত ফটোগ্রাফ। এ সকল অপরের পক্ষে যাহাই হউক, স্বরেস্ত্রের নিকট নূতন নহে। কারণ, তাহার পিতার বাটাও দরিত্রের কুটার নহে ; আর যাহাই হউক, সে দরিত্র পিতার আশ্রয়ে এত বড় হয় নাই। স্বরেক্স ভাবিতেছিল—সেই লোকটির কথা, যাহার সহিত দেখা করিতে, 4פיצ