পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঐকান্ত হোক, ছেলে-বেচা টাকা অনেকেই নেয়, আপনি নিলেও দোষ নেই, কিন্তু এর পরে গায়ের লোককে বাড়িতে ডেকে টাকার অহঙ্কার আর করবেন না এবং একজন বাইরের লোকের ভিক্ষের দানে ছেলের বিয়ে দিয়েচেন এ কথাটাও মনে রাখবেন । উদ্বেগ ও ভয়ে সকলের মুখ কালিবর্ণ হইয়া উঠিল। বোধ হয় সবাই ভাবিলেন, এবার ভয়ঙ্কর কিছু একটা ঘটবে এবং ফটক বন্ধ করিয়া সকলকে লাঠিপেটা না করিয়া কালিদাসবাবু আর কাহাকেও ঘরে ফিরিতে দিবেন না। কিন্তু তিনি কিছুক্ষণ নিঃশকে বসিয়া থাকিয়া মুখ তুলিয়া বলিলেন, টাকা আমি নেব না | বলিলাম, তার মানে ছেলের বিয়ে আপনি এখানে দেবেন না ? কালিদাসবার মাথা নাড়িয়া কহিলেন, না, তা নয়, আমি কথা দিয়েচি বিবাহ দেবো–তার নড়াচড় হবে না। কালিদাস মুখুয্যে কথার খেলাপ করে না। আপনার নামটি কি ? ঠাকুৰ্দ্দ ব্যগ্রকণ্ঠে আমার পরিচয় দিলেন। কালিদাসবাবু চিনিতে পারিয়া কছিলেন, ওঃ—তাই বটে। এর বাপের সঙ্গেই না একবার আমার ভয়ানক ফৌজদারী মামলা বাধে ? ঠাকুর্দ বলিলেন, আজ্ঞে হা—কিছুই আপনি বিশ্বত হন না। এ তারই ছেলে বটে, সম্পর্কে আমারও নাতি হয় । কালিদাসবাবু প্রসন্নকণ্ঠে বলিলেন, তা হোক। আমার বড় ছেলে বেঁচে থাকলে এমনি বয়সই হ’তো । শশধরের বিয়েতে এসে বাবা । আমার পক্ষ থেকে সেদিন তোমার নিমন্ত্রণ রইল । শশধর উপস্থিত ছিল, সে শুধু সঙ্কতজ্ঞ চক্ষে আমার প্রতি একটিবারমাত্র দৃষ্টিপাত করিয়াই পুনরায় মুখখানি আনত করিল। আমি উঠিয়া আসিয়া প্রণাম করিলাম, বলিলাম, যেখানেই থাকি অভূত; বৌভাতের দিন এসে নব-বধুর হাতে অল্প খেয়ে যাবো । কিন্তু অনেক রূঢ় কথা বলেচি, আমাকে আপনি ক্ষমা করবেন । কালিদাসবাবু বলিলেন, রূঢ় কথা যে বলেচ তা সত্যি, কিন্তু আমি ক্ষমাও করেচি। কিন্তু উঠলে চলবে না শ্ৰীকান্ত, শুভকৰ্ম্ম উপলক্ষে সামান্ত কিছু খাবার আয়োজন করে রেখেচি, তোমাকে ধেয়ে যেতে হবে । যে জাঙ্গে, তাই হবে, বলিয়া পুনরায় বলিয়া পড়িলাম। সেদিন পাত্রকে আশীৰ্ব্বাদ করা হইতে আরম্ভ করিয়া সভাস্থ অভ্যাগতগণের খাওয়াদাওয়া পৰ্য্যন্ত সমস্ত কার্ধ্যই নির্বিঘ্নে সুসম্পন্ন হইল। এই অধ্যায়ের প্রারম্ভে সছুপদেশ সম্বন্ধে যে নিয়মের উল্লেখ করিয়াছিলাম, পুটুর বিবাহট তাহারই একটা לסי