পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দ্বিতীয় সম্ভার).djvu/১৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ রমণী তাহাকে আগলাইয়া দাড়াইয়া ক্রোধে চোখ-মুখ রক্তবর্ণ করিয়া চীংকারে অগ্নিস্ফুলিঙ্গ বাহির করিতেছে। বিবাদ বাধিয়াছে পরাণ হালদারের সহিত। রমেশকে দেখামাত্র প্রৌঢ় চেঁচাইয়া প্রশ্ন করিল, ই বাবা, তুমি গায়ের একজন জমিদার, বলি, যত দোষ কি এই ক্ষ্যেস্তি বামনির মেয়ের ? মাথার ওপর আমাদের কেউ নেই বলে কি যতবার খুশি শাস্তি দেবে ? গোবিন্দকে দেখিয়াই কহিল, ঐ উনি মুখুয্যে-বাড়ির গাছ-পিতিষ্ঠের সময় জরিমান বলে ইস্কুলের নামে দশ টাকা আমার কাছে আদায় করেননি কি ? গায়ের ষোল আমা শেতলা-পূজোর জন্যে জোড়া পাঠার দাম ধরে নেননি কি ? তবে ? কতবার ঐ এক কথা নিয়ে ঘাটাঘাটি করতে চান শুনি ? রমেশ ব্যাপারটা কি, কিছুতেই বুঝিতে পারিল না। গোবিন্দ গাঙ্গুলী বসিয়া ছিল, মীমাংসা করিতে উঠিয়া দাড়াইল । একবার রমেশের দিকে একবার প্রৌঢ়ার দিকে চাহিয়া গম্ভীর গলায় কহিলেন, যদি আমার নামটাই করলে ক্ষ্যাস্তমাসী, তবে সত্যি কথা বলি বাছা! খাতিরে কথা কইবার লোক এই গোবিন্দ গাঙ্গুলী নয়, সে দেশমুদ্ধ লোক জানে। তোমার মেয়ের প্রাম্পিত্যও হয়েচে, সামাজিক জরিমানাও আমরা করেছি—সব মানি । কিন্তু তাকে যজ্ঞিতে কাঠি দিতে ত আমরা ছকুম দিইনি! মরলে ওকে পোড়াতে আমরা কাধ দেব, কিন্তু— ক্ষ্যাস্তমাসী চীৎকার করিয়া উঠিল, ম’লে তোমার নিজের মেয়েকে কাধে করে পুড়িয়ে এসে বাছা—আমার মেয়ের ভাবনা তোমাকে ভাবতে হবে না। বলি, ই৷ গোবিন্দ, নিজের গায়ে হাত দিয়ে কি কথা কও না ? তোমার ছোটভাজ যে ঐ ভাড়ার-ঘরে বসে পান সাজচে, সে ত আর বছর মাস-দেড়েক ধরে কোন কাশীবাস করে আমন হলদে রোগ শলতেটির মত হয়ে ফিরে এসেছিল শুনি ? সে বড়লোকের বড় কথা বুঝি ? ৰেশি ঘাটিয়ে না বাপু, আমি সব জারিজুরি ভেঙে দিতে পারি। আমরাও ছেলেমেয়ে পেটে ধরেচি, আমরা চিনতে পারি। আমাদের চোখে ধুলো 6&ब्रां शीघ्रं नी । গোবিন্দ ক্ষ্যাপার মত বাপাইয়া পড়িল, তবে রে হারামজাদা মাগী— কিন্তু হারামজাদ মাগী একটুও ভয় পাইল না, বরং এক পা আগাইয়া আসিয়া হাত-মুখ ঘুরাইয়া কহিল, মায়বি নাকি রে? ক্ষ্যেস্তি বামনিকে ঘটালে ঠক বাছতে গ৷ উজোর হয়ে যাবে তা বলে দিচ্চি। অামার মেয়ে ত রান্নাঘরে ঢুকতে যায়নি ; দোরগোড়ায় আসতে না আসতে হালদার ঠাকুরপো যে খামক অপমান করে বসলো, বলি তার বেয়ানের তাতি অপবাদ ছিল না কি ? আমি ত আর আজকের নই গো, বলি আরও বলব, না এতেই হবে ? রমেশ কাঠ হইয়া দাড়াইয়া রহিল। ভৈরব আচাৰ্য্য ব্যস্ত হইয়া ক্ষান্তর হাতটা t8