సి(ty গল্প-গ্রন্থাবলী • ক্লাস ঘরে আমার গা ছমছম করছিল, কোনও রকমে কথাটা সেরে পালাতে পারলে বাঁচ। সরোজ বললে—‘এখন খাকী ভাল হয়েছে ত? যাক। কিন্তু তুমি যে কামাই করলে, ছুটি নিয়েছিলে ?”—বললাম, আজ্ঞে না, ছয়টি নিতে হয় তা আঁমি জানতাম না স্যার । সরোজ বললে, ‘কামাই করার জন্যে তোমার জরিমানা হবে তা জান ?—বললাম, তা যদি হয় ত দেবো স্যার। —সরোজ বললে, “দেবে ? দেবে ?”—তার কথার কবরে আর তার ভঙ্গি দেখে আমার গা কে’পে উঠলো। চলে আসবার জন্যে আমি ফিরে দাঁড়াতেই— সরোজ পিছন থেকে হঠাৎ আমার গলা জড়িয়ে—এই তোমার জরিমানা—বলে—না গোআর আমি বলতে পারবো না।”—বলিয়া স্বামীর বকে মুখ লুকাইয়া, হরহ কবিয়া কাঁদিতে লাগিল। ৬ রাগে অবিনাশের সব্বশরীর দাউ দাউ করিয়া জৰলিয়া উঠিল। সল্লীর মাথায় গায়ে হাত বলাইয়া, তাহাকে আদর করিয়া, সালভূনা দিয়া বলিল, “কে’দ না—যা হবার তা হয়ে গেছে। সে দৰবক্তকে তার উপর্যন্ত শাসিত অামি দেবো। তারপর, তুমি কি করলে एटाई आञाझ तल ।” সষমা ক্ৰমে স্বামীর বক্ষ হইতে মুখ তুলিয়া বলিল, “আমি তৎক্ষণাৎ ফিরে, ঠাস করে তার গালে এক চড় কষিয়ে দিলাম।–চড় মেরে, আমার নিজেরই হাত ঝন ঝন করতে লাগলো। আমি তাড়াতাড়ি নীচে নেমে গিয়ে দারোয়ানকে বললাম, ‘দারোয়ান আমায় শীগগির একখান ট্যাক্সি ডেকে দাও আমি বাড়ী যাব।—আমি তখন ঠকঠক করে কাঁপছি। দারোয়ান বললে, “বোখার হয়ো মাইজী ? —আমি বললাম, হ্যাঁ বাবা, বহুৎ বোখার হয়। দাঁড়াতে পারছিনে। সে নিজের টল ছেড়ে উঠে বললে, “অখিভি বহুৎ লাল হয়া। আপ হিয়া বৈঠিয়ে মাইজদী, হাম আভি টেক্সি বোলায়ে দেতে হাঁয়।’ —ট্যাক্সিতে বসে বসেই সিথর করেছিলাম, এ অপবিত্র দেহ নিয়ে বাড়ী ঢকে স্বামীর মন্দির কলষিত করবো না—গঙ্গাস্নান করে সতী শিরোমণি কালীমাকে প্রণাম করে, তীব প্রসাদী সিন্দরে মাথায় প'বে পবিত্র হয়ে তবে বাড়ী ঢুকবো।”—বলিয়া সষমা নীরব হইল। স্বামীর কোলে মাথা দিয়া বিছানার উপর দেহ এলাইয়া দিল। অবিনাশও নীরবে সত্ৰীব মাথায়, কপালে, বকে হাত বলাইতে লাগিল। স্বামীর এই নীরব সাত্মনায় কিয়ৎক্ষণ পরে সুষমা অনেকটা শান্ত হইল। ক্রমে সে উঠিয়া বসিল । আমি প্রতিজ্ঞা করলাম সুষমা, এর উপযুক্ত প্রতিফল সেই পাষণ্ডকে আমি দেবো, এবং কালই –তুমি শান্ত হও—যা হয়েছে তা ভুলে যেতে চেণ্টা কর।”—বলিয়া অবিনাশ মন্ত্রীকে চমবন করিতে উদ্যত হইল। সষমা বাধা দিয়া বলিল, “এখন না—গঙ্গাস্নান করে গঙ্গা মাত্তিকা দিয়ে এই ঠোঁট দটো বেশ করে আমি মেজে ফেলেছি। তারপর, মা কালীর মন্দিরের চৌকাঠের উপরও ঠোঁট দলটো বলিয়েছি। কিন্তু এখনও আমার মনের গলানি যায়নি—তোমার পায়ের ধলো দাও, তাই আমি ঠোঁটে মেখে এ দটোকে পবিত্র করে নিই।”—বলিয়া সষেমা স্বামীর পদযুগল ধারণ করিয়া, নিজ মস্তকে ঠেকাইয়া তাহাতে চকেন করিতে লাগিল। পরদিন নবরশ্মি' আফিসে প্রবেশ করিয়া ক্ৰোধোন্মত্ত অবিনাশ সরোজকে সড়াং সড়াং করিয়া কয়েক ঘা বেত মারিয়াছিল, সে কথা লইয়া সাহিত্যিক মহলে কিরাপ হৈচৈ পড়িয়া গৈয়াছিল তাহা বোধ হয় অনেকেবই স্মরণ থাকিতে পারে। কিন্তু আসল কারণ কেহই জানিতে পারে নাই। নবরশ্মির তরফ হইতে ইহাই প্রচার করা হইয়াছিল যে, অবিনাশবাবর প্রেরিত কোনও প্রবন্ধ অমনোনীত করার জন্যই নিরীহ সম্পাদক মহাশয় ওরাপভাবে তাহার হন্তে লাঙ্কিত হইবাছিলেন।