পাতা:গল্প-গ্রন্থাবলী (প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়) তৃতীয় খণ্ড.djvu/১৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

きもげ গল্প-গ্রন্থাবলী বিনয়ভূষণ প্রেসিডেন্সি কলেজে রসায়নের অধ্যাপক। শ্বশুরের তুল্য না হইলেও, বিনয়ভূষণ ধনী-লোক, দেশে তার বিষয়-সম্পত্তি আছে, চাকরিটীকুই ভরসা নহে। খাকী অর্থাৎ কনিষ্ঠা কন্যার নাম সধাংশনলিনী বা সধা। তাহার বয়ঃক্ৰম চতুদশ বৎসর, বেথন স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী। বরদাবাবর পত্রটি এখন সপ্তমবর্ষীয় বালক মাত্র। অতুলও রসায়নের অধ্যাপক, কিন্তু বেসরকারী কলেজের। দুইশত টাকা মাত্র বেতন পায়। অতুল ও বিনয় পাবে সহপাঠী ছিল। বন্ধ-গহেই বন্ধ-শ্যালিকা সাধার সহিত অতুলের পরিচয়ের সত্রপাত। ক্ৰমে সেই পরিচয় রীতিমত ঘনিষ্ঠ হইয়া উঠিয়াছে। নিমালা ও তার স্বামী উভয়েরই ইচ্ছা, অতুলের সঙ্গেই সাধার বিবাহ হয়। অতুলের যেদি আসিবার কথা, নিমালা সেদিন বাপের বাড়ী গিয়া সন্ধাকে লইয়া আসে। আবার সন্ধা কোনও দিন আসিলে, অতুলকে খবর দিতে বিনয় ভুলে না। বস্তুতঃ ইহাদিগের ষড়যন্ত্র বা সহযোগিতার ফলেই ব্যাপারটি এরপ সিঙীন হইয়া দাঁড়াইয়াছে। 晚 ইহারা দটি বোনেই সন্দেরী, তবে সন্ধা বেশী সন্দরী। বিশেষ তাহার গাত্রবণটি চমৎকার। এমন রঙটি বাঙ্গালী-ঘরে দলভ—আক্ৰমাণী বিবির অপেক্ষা কিছুমাত্র হীনপ্রভ নহে । দই তিন মাস পরে, একদিন সন্ধ্যায় আপিস হইতে ফিরিয়া জলযোগ করিতে করিতে বরদাবাব পত্নীকে বলিলেন, “ওগো, কালকে খাকীকে দেখতে আসবে।” "কারা, কোথা থেকে ?” 歌 “মৈমনসিং জেলার মরুদনগরের রাজবাড়ী থেকে। রাজা মুকুন্দনাথের নাম শনেছ ত? মস্ত বড়লোক। যেখানে তাঁর রাজধানী, সেখানকার নাম পাবে কি একটা ছিল; এখন এই রাজার নামে সে স্থানের নাম মুকুন্দনগর হয়েছে। রাজা উপাধি হ’লে কি হয়, অনেক মহারাজার চেয়ে টাকা বেশী।” • গহিণী বলিলেন, “রাজা মুকুন্দনাথের নাম ত ছেলেবেলা থেকে শনছি। তাঁর বয়স হয়েছে নিশ্চয় ! এ বয়সে আবার বিয়ে করবেন নাকি ?” “দর পাগলী রাজা কেন, রাজকুমারের জন্যে। রাজা মকুন্দনাথের এক মামা, কুমারের গহশিক্ষক, তার এক বন্ধ, আর একজন জ্যোতিষী পণ্ডিত—এই চারজনে কুমারের জন্যে পাত্রী খুজতে বেরিয়েছে। আমাদের স্ব-শ্রেণীর লোক যিনি যেখানে আছেন, সকলের বাড়ী গিয়ে তারা মেয়ের সম্প্রধান করছে । তিন মাস হ’ল তারা এই কাজে বেরিয়েছে, নানা পথানে ঘরে এখন তারা কলকাতায় এসে উপস্থিত হয়েছে।” “রাজকুমারের বয়স কত ?” “কুড়ি-একুশ ।” “স্বভাব-চরিত্র কেমন ? বড়লোকের ঘরের বওয়াটে ছেলে নয় ত ? তা যদি হয়, তা হ'লে কিন্তু তাঁকে মেয়ে দেবো না, তা তিনি রাজকুমারই হোন, আর বাদশা-কুমারই হোন।" o এই কথায় বরদাবাব একটা বিব্রত হইয়া পড়িলেন। লুচি ছিড়িয়া আলর দমে মাখিতে মাখিতে বলিলেন, “তা সবভাব ভাল হবারই সম্পভাবনা। অত বড় রাজার ছেলে ।” গিন্নী বলিলেন, “যা বললে। বড়লোকের ছেলের, রাজার ছেলের স্বভাব-চরিত্র কি আর বেগড়ায় ? হত বেগড়ায় গরীবেব ছেলের । যত গরীব কেরাণী, মাস্টার, এদের ছেলেরাই সচরাচর মদ খেয়ে কু-পল্লীতে পড়ে থাকে, রাত্রে বাড়ী আসতে পারে না— नाझे ?”