পাতা:গল্প-গ্রন্থাবলী (প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়) তৃতীয় খণ্ড.djvu/১৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

नदशाब्र विवाह Sఆషి কত্তা বলিলেন, “সে কথা বলছিনে। তবে সহবৎ বলে একটা জিনিৰ আছে ত ? সে যাই হোক, মেয়ে যদি তাদের পছন্দই হয়, সে সব বিষয়ে খোঁজ খবর না নিয়েই কি আর বিয়ে দেবো ?” • “কখন দেখতে আসবে ?” “কাল বিকেলে চারটে থেকে পাঁচটার মধ্যে। আমি তিনটের পরেই আপিস থেকে ফিরে আসবো।” “নিম্মলাকেও আনানো উচিত ত ?” বরদাবাব যেন কিঞ্চিৎ অনিচ্ছার সহিত বলিলেন, “আচ্ছা, আনিও তাকে।" অতঃপর বরদাবাব নীরবে জলযোগ সমাপ্ত কবিলেন। তিনি যখন উঠিতেছিলেন, গহিণী তখন বলিলেন, "হাগা, তবে যে বলেছিলে, মেয়ের ষোল বছর না হ’লে কোন মতেই বিয়ে দেবে না—তোমার মত-বিশ্বাসের বিরুদ্ধে কাজ করবে না।” ভূত্য রপোর জগ হইতে জল ঢালিতেছিল, প্রকাণ্ড রপার চিলিমচির উপর বরদাবাব হস্ত প্রক্ষালন করিতেছিলেন, সহসা কোনও উত্তর দিলেন না। মখোদি ধৌত করিয়া তোয়ালে দিয়া হাত মুছিতে মুছিতে বলিলেন, এক সময় তাই বলতাম বটে। এখন ভেবে দেখছি, এরকম একটা সুযোগ যদি পাওয়া যায়—” গহিণী বলিলেন, "তা হলে বল, তোমার মত-বিশ্ববাস-ফিশ্বাস কিছুই নয়—ও-সব ভণ্ডামি মাত্র, তুমি একজন সযোগবাদী ! বরদাবাবর মনে হইল, সুযোগবাদী না হইলে কি তিনি এত বড় একটা এটণী* হইতে পারিতেন ? কিন্তু সে ভাব গোপন করিয়া, মদ হাসিয়া বলিলেন, “দেখ গিন্নী, তোমায় যখন বিয়ে করে এনেছিলাম, তখন তখন তুমি ক-খও চিনতে না। নিজে রাত জেগে মাস্টারি করে তোমায় লেখাপড়া শিখিয়েছিলাম, তার কি এই প্রতিফল ?” "ק הקsס" "নইলে আজ তুমি আমায় এমন সাধ-ভাষায় গালাগালি দিচ্চ !" "কখন আবার তোমায় আমি গালাগালি দিলাম ?” "কেন, শালা না বললে কি গালাগালি হয় না ? ঐ যে তুমি আমায় সংযোগবাদী বললে ?” “সেটা বুঝি গালাগালি হ’ল ?” “ভয়ঙ্কর ৷ তুমি যদি পরিবাব না হয়ে খবরেব কাগজের সম্পাদক হতে, তা হলে আমি তোমার নামে মানহানির নালিশ করে দিতাম । সেই রাত্রিতেই সন্ধা শুনিল, রাজবাড়ীর লোকে তাহাকে দেখিতে আসিবে। শনিয়া তাহার প্রাণে বড়ই ভয হইল। এই তিন মাস কাল অতুলের সহিত সাক্ষাৎ নাই—পিতার আদেশে দিদির বাড়ী যাওয়া তাহার বন্ধ হইয়া গিয়াছে, তবে দিদি মাঝে মাঝে আসে বটে, এবং দিদির নিকট হইতে অতুলের সংবাদ পায়। দিদির মধ্যস্থতায় অতুলের সঙ্গে * গোপনে সে পত্রব্যবহার কারবার অভিলাষও জ্ঞাপন করিয়াছিল, কিন্তু নিন্মলা তাহাতে রাজি হয় নাই, বলিয়ছিল, “না ভাই, কি জানি, বাবা যদি শেষ পয্যন্ত মত নাই করেন, সে সব তুই ভুলে যাবারই চেষ্টা কর।” সন্ধা বলিয়াছিল, “দিদির যেমন কথা । চেটা করলেই বুঝি মানুষকে মানুষ ভুলতে পারে ?" সে রাত্রিতে নিজ শয়নকক্ষে প্রবেশ করিয়া, আলো নিবাইয়া বিছানায় বসিয়া সখা প্রথমটা খানিক কাঁদিল। তারপর আলো জালিয়া, নিজ আলমারি হইতে অতুলের ফটোগ্রাফখানি বাহির করিয়া অনেকক্ষণ ধরিয়া সেখানি দেখিল । শেষে আলো আবার নিবাইয়া অতুলের ছবিখানি বালিসের তলায় রাখিয়া মনে মনে দেব-দেবীগণের নিকট প্রার্থনা করিতে লাগিল, “হে মা কালী, হে মা দরগা, হে বাবা মহাদেব, হে বাবা জগন্নাথ ।