পাতা:গল্প-গ্রন্থাবলী (প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়) তৃতীয় খণ্ড.djvu/১৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নতন বউ Saషి না। সেই অবধি বাড়ীতেই বসে আছে। গাঁয়ের যত সব বওয়াটে ছেলের সঙ্গোই তার মেলামেশা। ফলেট বাজায়, থিয়েটার করে—এই সব নিয়েই আছে। তাকে যদি বাবা, সাহেবকে বলে কয়ে তোমাব আপিসে একটা ছোটখাট কাজে ঢুকিয়ে নিতে পার, তবে গরীব ব্রাহ্মণের বড়ই উপকার করা হয়।”—বলিয়া মুখোপাধ্যায়, জামাতার হাত দুটি ধরিলেন। বসন্ত বিব্রত হইযা বলিল, আচ্ছা, আচ্ছা, কাকা ! অত করে আমায় বলতে হবে কেন ? এখন ত আমাদেব আপিসে কোনও কাজ খালি নেই—একটা খালিটালি হলেই আমি চেষ্টা কবব বইকি ৷” মখোপাধ্যায় হাত ছাড়িষা বললেন, তাই কোরো, বাবা । দেখ, তোমার বশরেব সঙ্গে ছেলেবেলা থেকে আমার বন্ধত্বে। একসঙ্গে পাঠশালায় গিযেছি। সেই সময় থেকে দুজনে আমবা হরিহর আত্মা বললেই হয়। তোমার উপর তোমার বশরের যদি কোন দাবী থাকে, তবে আমারও সেই দাবী আছে জেনো।” বসন্ত বলিল, আজ্ঞে, সে ত ঠিক।” তাহার পর অন্যান্য কথাবাৰ্ত্তা চলিতে লাগিল। কোথায় বাড়ী ভাড়া লইয়াছে, কিবাপ বাড়ী, আপিস হইতে কত দর—ইত্যাদি। ক্ৰমে বান্ত্রি অধিক হয় দেখিষা মন্খোপাধ্যায বিদাষ গ্রহণ কবিলেন। বসন্তকে তাহাব খবশ্রষ্ঠাকুরাণী ডাকিযা পাঠাইলেন সে অন্তঃপারমধ্যে প্রবেশ করিল। পবদিন বসন্ত উঠিযা, মখহাত ধুইয়া চা পান কবিতেছে, এমন সমষ তাহার শ্বাশুড়ীঠাকুবাণী আসিয়া, অধঘোমটা দিয়া নিকটে দড়িাইষা বললেন, “হ্যাঁ বাবা, নিন্মলের কাছে একটা কথা শুনে ষে আমাব বড় ভাবনা হচ্ছে " বসন্ত কহিল, “কি কথা, মা ?” * তোমাব আপিস নাকি রাত্তিরে ?” হ্যাঁ মা, তাই বটে। সকালবেলা আমাদের খবরের কাগজ বেরোয় কিনা তাই বাত ৯টা ১০টাব সময আমাম আপিসে যেতে হয, সাবা বাত সেখানে থাকতে হয । আবাব, দিনেক বেলাও ২৪ ঘণ্টাব জন্যে গিযে একটু দেখাশুনো কবে আসতে হয।” তবেই ত বড়ই ষে ভাবনার কথা হ’ল, বাবা! তুমি নাকি নিম্মলাকে বলেছ যে, দিন-বাত থাকবাব জন্যে একটা ঝি ঠিক করে রেখেছি, সেই তোমায় রাত্রে আগলাবে, তোমাব ভয কি ? কিন্তু নিৰ্ম্মলা যে মোটেই সাহস পাচ্ছে না বাবা! বিদেশ-বিভূই, তাষ ছেলেমানষে, সারা বাত বাড়ীতে একটা পরষমানুষ থাকবে না, অসুখ-বিসুখ আছে, দায-বিপদ আছে, আপিস থেকে তোমায় যদি ডেকে আনতে হয় ত কে যাবে বল দেখি r নিম্মলা ত ভেবে সাবা হযে যাচ্ছে। কৰ্ত্তাও শুনে মাথাষ হাত দিয়ে বসে পড়েছেন। " বসন্ত বলিল, “সে জন্যে কোনও ভাবনা নেই, মা ! আমি যে বাড়ীটা নিযেছি, সেটা একটা বড় বাডীর আধখানা অংশ। এক অংশে বাড়ীওয়ালা সপরিবাবে বাস করেন, এক অংশ ভাডা দিয়েছেন। অবশ্য দুই অংশই আলাদা—আলাদা সদর দবজা, কল, পাইখানা সবই আলাদা। দ্য বাডীর একতলায দোতলায় মাঝের দবজা জানালা আছে। সেই দবজা খুললেই দ্য বাড়ীব মেয়েদের স্বচ্ছন্দে যাতায়াত চলতে পারে। বাড়ীওযালা বাবটির প্রবীণ বযস, অতি ভদ্রলোক। তিনি আমায় বলেছেন, কোনও ভাবনা নেই তোমাব, আমবা বয়েছি, দেখবো শনবো—যখন যা দরকার।” এই সময দত্ত মহাশয আসিয়া সেখানে দাঁড়াইলেন। বলিলেন “বাবা বসন্ত, এক কাজ কর তুমি। দিনরাত্রির ঝি রেখেছ, বেশ সে-ও থাক। রামাকেও তুমি সঙ্গে নিয়ে যাও। রামা নিশমালাকে কোলে পিঠে করে মানুষ করেছে, বাড়ীতে ও থাকলে, নিন্মলাব কোনও ভয থাকবে না, আমরাও নিশিচন্ত থাকতে পারবো।”