পাতা:গল্প-গ্রন্থাবলী (প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়) তৃতীয় খণ্ড.djvu/৩২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

లిపిఇ গল্প-গ্রন্থাবলী মেয়েটির তরণ-মুখখানি দেখিয়া ফুলদা অনমান করিল, ইহার বয়স বড় জোর তের চৌদ্দ বছর, সতরাং স্থির করিল, ইহাকে আপনি বলার কোনই প্রয়োজন নাই। আবার tস জিজ্ঞাসা করিল, “কেন তুমি কাঁদছ বল না। তোমার কিছ ভয় নেই, কি হয়েছে বল। যদি তোমার কোনও উপকার আমার দ্বারা সম্ভব হয়, তা নিশ্চয়ই আমি করবো।” তব মেয়েটি মািখও খোলে না, উত্তরও করে না। কুলদা অত্যন্ত ব্যাকুল হইয়া পড়িল। বারবার জিজ্ঞাসা করিতে, মেয়েটি অবশেষে ফোঁপাইতে ফোঁপাইতে বলিল, “আমার সব্বনাশ হয়েছে, আমি হারিয়ে গেছি।” কুলদার প্রশ্নের উত্তরে নিজের ইতিহাস মেয়েটি যাহা বলিল তােহা এই। জন্মাবধি পিতামাতার সহিত সে পাঞ্জাবে ছিল, জলন্ধরে কনা-মহাবিদ্যালয়ে পাঠ করিত। তাহার নাম কমলা । সম্প্রতি পিতার সহিত যে কলিকাতায় আসিয়াছিল। আজ বেলা দশটার পর টীমারে পিতা তাহাকে এই বাগান দেখাইতে আনিয়াছিলেন। বেড়াইয়া বেড়াইয়া তাহার অত্যন্ত ক্ষধা পায় : তাই পিতা তাহাকে এইখানে বসাইয়া, খাবার কিনিতে বাজারে গিয়াছেন। তিন ঘণ্টা অতীত হইয়াছে, এখনও তিনি ফিরিলেন না, নিশ্চয়ই তাঁহার কোন অভাবনীয় বিপৎপাত হইয়াছে। কুলদা মনে মনে বলিল, “দেখ দেখি একবার আক্কেল লোকটার! মেড়োর দেশে থাকে কিনা—কত আর বন্ধি হবে ? এই সোমত্ত মেয়েটাকে এখানে একলা ফেলে বাজারে গেছেন খাবার কিনতে! বাজার কি এখানে ?” মেয়েটি আবার কান্নার উপক্ৰম করিতেছে দেখিয়া কুলদা বলিল, “তুমি কিছ ভয় কোরো না, নিশ্চয়ই তোমার বাবা আর বেশী দেরী করবেন না, এইবার ফিরবেন। চল বরঞ্চ আমরা ফটকের কাছে গিয়ে বসে থাকি। তিনি আসছেন দরে থেকেই আমরা দেখতে পাব। তিনিও বাগানে ঢুকতেই তোমায় দেখতে পাবেন। এস আমার সঙ্গে, কিছ ভয় নেই তোমার । তোমাকে তোমার বাবার হাতে জিন্মে করে দিয়ে তার পর আমি যাব এখান থেকে ৷” মেয়েটি কাঁদিতে কাঁদিতে কুলদার পশ্চাৎ পশ্চাৎ চলিল। যাইতে যাইতে বলিল, সন্ধ্যে অবধি অপেক্ষা করেও বাবার যদি দেখা না পাই. তা হলে কি হবে আমার ?” কুলদা বলিল, “তোমার কোনও চিন্তা নেই। সন্ধ্যা পয্যন্ত এখানে অপেক্ষা করেও যদি তাঁর দেখা না পাওয়া যায়, তোমাকে ভবানীপুরে আমাদের বাড়ীতে নিয়ে যাব, তার পর তোমার বাবার সন্ধান করবো। জলন্ধরে তোমার মাকে চিঠি লিখবো তোমার আত্মীয়সবজন যে যেখানে আছেন চিঠি লিখবো ।” বসিয়া বসিয়া সন্ধ্যা হইল, মেয়েটির পিত। কিন্তু ফিরিল না। কুলদা তখন শেষ rটীমারে তাহাকে কলিকাতায় আনিল, এবং বাড়ী আসিয়া তাহাকে নিজ জননীর নিকট সমপণ করিয়া সমস্ত অবস্থা তাঁহাকে জানাইল । জননী গোপনে একট হাসিলেন। ॥ ख्नि ॥ দিয়াছেন। এক সপ্তাহ কাটিল, কিন্তু মেয়েটির পিতার কোন সন্ধান কুলদা করিতে পারিল না। ভগবতীবাব, হারাণো মেয়েটির পিতার খোঁজ করিবার ভার পর কুলদার উপরেই কুলদা আপিসে গেলে, বিপ্রহরে সারদাবাব ও তাঁহার সত্ৰী প্রায়ই কমলাকে দেখিতে আসেন। বলা বাহুল্য কমলা সারদাবাবরই কন্যা। সারদাবাব ও কুলদার পিতা উভয়ে ষড়যন্ত্র