পাতা:গল্প-গ্রন্থাবলী (প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়) তৃতীয় খণ্ড.djvu/৩৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভূত না চোর ? ૭૬હ আমি বললাম—“কুকুর ত হইতে পারে?” “কুকুর কোথা দিয়া যাইবে ?” “সাহেবের কুকুর বোধ হয় সাহেব ভুলিয়া ফেলিয়া গিয়াছিলেন।” “সাহেবের ত কুকুর আসে নাই।” মনে করিলাম—তাই ত বলিলাম—“বোধ হয় চোর-টোর।”—গহিণী এ কথার প্রতিবাদ করিলেন না। আমরা দুইজনে অনেকক্ষণ বসিয়া রহিলাম। আর কোনও শব্দ শনা গেল না। సౌ গহিণী চলিয়া গেলেন। তাহার পর কখন ঘুমাইয়া পড়িলাম মনে নাই । পরদিন প্রভাতে উঠিয়া দেখিলাম, শৈলবালার চক্ষ, রক্তবর্ণ। বলিলেন, সমস্ত রাত্রি ভযে তাঁহার ঘন্ম হয় নাই। আবার নাকি বেশী রাত্রেও দুইবার শব্দ হইয়াছিল। আমি যে আর একদিন ঐরপে শব্দ শুনিয়াছিলাম তাহা এখনও পৰ্য্যন্ত তাঁহাকে বলি নাই। এইবার বলিলাম। শুনিয়া তিনি অধিক ভীত হইলেন। যথাসময়ে ছেলেরা আহার করিয়া সকলে গেল। আমি কাছারি গেলাম। মনটা কেমন চঞ্চল হইয়া রহিল। কাহারও কাছে এ কথা বলিলাম না। সহকমীরা সকলেই জিজ্ঞাস করিলেন– অক্ষয়বাব, আজ আপনার অসুখ করেছে নাকি ?” একজনকে ঠাকুরদাদা বলি, তিনি ঠাট্টা করিয়া বলিলেন—“কাল রাত্রে নাতবউ ঘর থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন বুঝি ?” ইত্যাদি। সে দিন একটা সকাল সকাল কাছারি বন্ধ হইল। পরদিন বকরাইদের ছয়টি। বাড়ী ফিরিয়া আসিয়া দেখিলাম, শৈলবালা গভীর নিদ্রায় মগ্ন। ছেলেরা স্কুল হইতে ফিরিয়া আসিয়া তাঁহাকে জাগাইল। তাহারা খাবার খাইয়া খেলা করিতে গেল। আমরা পরামর্শ করিলাম, আজ সমস্ত রাত্রি জাগিয়া থাকিয়া দেখিতে হইবে ব্যাপারটা কি। সকাল সকাল বালকবালিকাদিগকে খাওয়াইয়া তাহাদিগকে বিছানায় দেওয়া হইল । আমি ভাল আহার করিতে পারিলাম না। মনের মধ্যে একটা উৎকণ্ঠা অমন করিয়া যকিরা বসিয়া থাকিলে কি খাওয়া যায় ? আর শৈলবালা—তিনি ত নাম মাত্র আসনে বসিলেন । দইটা বাতি ঠিক করিয়া রাখলাম। দিয়াশলাই রাখিলাম। গহিণীকে বলিলাম —“চল আমরা ওঘরে গিয়ে কেছ পডি-টড়িগে।” আলোক সন্মখে রাখিয়া গাঁহিণী একখানি বাঙ্গালা বহি লইয়া পড়িতে লাগিলেন, আমি তামাক খাইতে খাইতে শুনিতে লাগিলাম। কিন্তু আমার মন তখন উদভ্ৰান্ত। কতক শনি, আবার গল্পের সত্রে হারাইয়া ফেলি। এই রকম করিয়া রাত্রি দশটা বাজিল। তখন আস্তে আস্তে হাট হাট করিয়া শব্দ আরম্ভ হইল। শৈলবালা বলিলেন—“ঐ দেখ।” বলিয়া বহি বন্ধ করিলেন। আমি তাঁহার মুখের পানে চাহিয়া রহিলাম। ক্ৰমে শব্দ বেশ স্পষ্ট আরম্ভ হইল। আমি বলিলাম—“আর কিছ নয়, উপরে চোর গিয়াছে।” গহিণী বলিলেন—“চোর হইলে এক দিনে সব চরি করিয়া লইয়া যাইত, রোজ রোজ আসিবে কেন ? ও ভূত বই আর কিছ নয়।” এই কথা বলিতে বলিতে তাঁহার মুখ পাংশবেণ ধারণ করল এবং ললাট ঘন্মান্ত হইল । ಕ್ಲೇ· ಇಸ ಕಾ in “ಗ : * “झानि 2” আমি তখন উঠিয়া জানালার কাছে গেলাম। মাখ বাহির করিয়া, উপরের দিকে চাহিয়া বলিলাম—“কোন হ্যায় রে?” বরটা যেন বড় উচ্চ হইল না। পনেশ্চ সপ্তমে বলিলাম,—“কোন—হ্যায়-রে ?”