পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (সপ্তম সম্ভার).djvu/৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

श्रृश्षांश् যে, এক মুহূর্তেই অচলার বুকের ভিতরটা আলোড়িত হইয়া উঠিল । তাহার মা নাই, সে অভাব এতটুকু পূর্ণ করে, বাড়িতে এমন কোন আত্মীয় স্ত্রীলোক কোনদিন নাই । তাহার জ্ঞান হইয়া পৰ্য্যন্ত এতদিন সে পিতার স্নেহেই মানুষ হইয়া উঠিয়াছে ; কিন্তু সে স্নেহ যে তাহার হৃদয়ে কতখানি খালি ফেলিয়া রাখিয়াছিল, তাহা এক মুহূর্বেই স্বম্পষ্ট হইয়া উঠিল—আজ পরের বাড়ির পরের পিসিমা যখন ‘বৌমা বলিয়া ডাকিয় তাহাকে আদর করিয়া কাছে বসাইলেন। প্রথমটা সে অভিনব সম্বোধনে একটুখানি লজ্জিত হইয়া পড়িল ; কিন্তু ইহার মাধুর্ঘ্য, ইহার গৌরব তাহার নারী-হৃদয়ের গভীর অন্তস্তলে বহু গুণ পৰ্য্যন্ত ধ্বনিত হইতে লাগিল । দেখিতে দেখিতে দু'জনের কথা জমিয়া উঠিল । অচলা লজ্জিতমুখে প্রশ্ন করিল, আচ্ছা পিসিমা, আমাকে যে আপনি কাছে বসলেন, কৈ ব্রাহ্ম-মেয়ে বলে ত ঘূণা করলেন না ! পিসিমা তাড়াতাড়ি আপনার অঙ্গুলির প্রস্থ দ্বারা তাহার চুম্বন গ্রহণ করিয়া বলিলেন, তোমাকে ঘৃণা করব কেন মা ? একটু হাসিয়া কহিলেন, আমরা হিন্দুর ঘরের মেয়ে বলে কি এমন নিৰ্ব্বোধ, এত হীন বেীমা, যে শুধু ধৰ্ম্মমত আলাদা বলে তোমার মত মেয়েকেও কাছে বসাতে সঙ্কোচ বোধ করব ? মৃণা করা ত অনেক দূরের কথা মা ! অচলা অত্যন্ত লজ্জা পাইয়া বলিল, আমাকে মাপ করুন পিসিমা, আমি জানতুম না । আমাদের সমাজের বাইরে কোন মেয়েমানুষের সঙ্গেই কোনদিন আমি মিশতে পাইনি ; শুধু শুনেছিলুম যে, তারা আমাদের বড় ঘৃণা করেন ; এমন কি, একসঙ্গে বসলে দাড়ালেও তাদের স্নান করতে হয় । পিসিমা বলিলেন, সেটা ঘৃণা নয় মা, সে একটা আচার । আমাদের বাইরের আচরণ দেখে হয়ত তোমাদের অনেক সময় এই কথাই মনে হবে, কিন্তু সত্যি বলচি মা, সত্যিকারের ঘৃণা—আমরা কাউকে করিনে । আমাদের দেশের বাড়িতে আজও আমার বাদগী জ্যেঠাইমা বেঁচে আছে—তাকে কত যে ভালবাসি, তা বলতে পারিনে । 轉 একটুখানি থামিয়া বলিলেন, আচ্ছ, একটা কথা জিজ্ঞাসা করি মা তোমাকে— এ কি স্বরেশের মুখ থেকে শুনে, না, আজ তোমার আমাকে দেখে এ-কথা মনে পড়ল ? স্বরেশের উল্লেখে অচলা ধীরে ধীরে বলিল, অনেকদিন আগে একবার তিনিও বলেছিলেন বটে। পিসিমা বলিলেন, ঐ ওর স্বভাব। একটা কথা মনে হলে আর রক্ষে নেই—ও "ూ