পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (অষ্টম সম্ভার).djvu/২৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ উৎসব শেষ হইয়া গেল, তৰুৰ্তাহার ফিরিবার গা নাই দেখিয়া একদিন হেম বলিল, আর কতদিন জামাইয়ের বাড়ি থাকবে মা ? লোকে নিন্দে করবে ষে । স্বলোচনা রাগিয়া উঠিয়া বলিলেন, তুই আমাকে তাড়াতে পারলেই বাচিল । এ তবু ত আপনার মেয়ে-জামায়ের বাড়ি, সেইখানেই কোন নিজের বাড়িতে ফিরে যাব त्तनि ? হেম কিছুক্ষণ অবাক হইয়া থাকিয়া বলিল, তোমার দোষ নেই মা, এ আমাদের মেয়েমানুষের স্বধৰ্ম্ম । আমরা আপনার পর একদিনেই স্কুলে যাই। দিন কাটিতে লাগিল, আবার দুর্গাপূজা ঘুরিয়া আসিল । গুণী বড় ঘটা করিয়া পূজার তত্ব পাঠাইয়াছিল। স্থলোচনা হেমকে আড়ালে ডাকিয়া বলিলেন, গুণী আমার ৱাক্ষ বটে, কিন্তু এ-সব জানে । মিষ্টায় প্রভৃতি পাড়ায় বিতরণ করিয়া কাপড়-চোপড় সকলকে দেখাইয়া বলিতে লাগিলেন, আমি নেই, তাই ছেলে আমার বোনকে তত্ত্ব পাঠিয়েছে ; এবং পূজা দেখিয়াই তিনি ঘরে ফিরিবেন, এ-কথাও সকলের কাছে প্রচার করিয়া দিলেন । র্তাহার যাওয়া সম্বন্ধে হেম সেদিন হইতে আর কোন কথা বলিত না, আজও চুপ করিয়া রহিল। স্থলোচনা বুঝিতে না পারিয়া মনে মনে বলিলেন, যদি কখন ভগবান দিন দেন তখন বুঝবি মা, সন্তানকে ছেড়ে যেতে মায়ের প্রাণ কি করে । কিন্তু পূজা শেষ না হইতেই স্থলোচনাকে শক্ত করিয়া ম্যালেরিয়ায় ধরিল। মাস‘খানেক জরভোগের পরে, একদিন হেম বলিল, আর কেন মা, বিপদে মধুসুদনকে স্বরণ করতে হয়, যদি বাঁচতে চাও গুণীদাকে ডাক দাও । বলিতে বলিতে তাহার দুই চোখ জলে ভরিয়া গেল, তারপর সেই জল ঝর বাবু করিয়া ঝরিয়া পড়িতে লাগিল, উদ্ধ মুখে সে স্থির হইয়া বসিয়া রহিল। মা বলিলেন, তাই কর হেম, তাকে চিঠি লিখে দে । হেম বাড়ির সরকারকে দিয়া মাকে লইয়া যাইবার জন্ত গুণেন্দ্রকে চিঠি শিখাইয়া দিল । দুইদিন পরে মানদা ও দারোয়ান আসিয়া উপস্থিত হইল। হেম মানদাকে ভাকিয়া জিজ্ঞাসা করিল, গুণীদা এলো না কেন রে ? মানদ বলিল, তারও অস্থখ। প্রায় ছ হপ্ত হয়ে গেল, সন্ধি-কালি, কোনদিন বা একটু জরও হয়, না হলে তিনিই আসতেন। হেম আশা করিয়াছিল, গুণী৷ জাগিৰে । ኧፃፀም