পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (সপ্তম সম্ভার).djvu/২৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

अंद्भ९-जांश्डि]-ज९áयंश কেদারবাৰু নীরবে চায়ের বাটিটা মুখে তুলিয়া দিলেন এবং শেষ হইলে নামাইয়া রাখিয়া একটা নিশ্বাস ফেলিয়া কহিলেন, আমি এই কামনাই কেবল করি মৃণাল, তুমি আসচে বারে যেন আমার মেয়ে হয়ে জন্মাও । বুকে করে মানুষ করার বিস্তেটা আমার খুব শেখা আছে মা, সেইটে যেন সেবার সারাজীবন ভরে খাটাবার অবসর পাই । শেষ দিকটায় তাহার কণ্ঠস্বর কঁাপিতে লাগিল, কিন্তু এই ধরণের আলোচনাকেই মৃণাল সবচেয়ে ভয় করিত। তাই তাহার অপরিস্ফুট আবেগের প্রতি লক্ষ্যমাত্র না করিয়াই সহাস্তে কহিল, বা বেশ ত বাবা, তোমার অনেক ছেলেমেয়ের মধ্যে আমিও যেন একজন হই । বৃদ্ধ তৎক্ষণাৎ সবেগে মাথা নাড়িয়া কহিলেন, অনেক নয় মা, অনেক নয় ; কেবল তুমি একা—আমার একটি মেয়ে । একলা তুমি আমার সমস্ত বুক জুড়ে থাকবে। এবার যা কিছু তোমার কাছে শিখে যাচ্ছি, সেগুলি আবার একটি একটি করে আমার মেয়েকে শিখিয়ে দিয়ে আবার ঠিক এমনি করে বুড়ো-বয়সে সমস্তটুকু তার কাছ থেকে ফিরে নিয়ে পরজন্মের পথে যাত্রা করব । বলিয়াই তিনি অলক্ষ্যে একবার চোখের কোণে হাত দিয়া লইলেন । মৃণাল ক্ষুন্ন-কণ্ঠে কহিল, তুমি কেবল আমাকে অপ্রতিভ কর বাবা। আমি কি জানি বল ত ? এই যে মা আমার খাওয়া হয়নি, আমি নিজে জানলাম না, কিন্তু তুমি জানতে । ও ত ভারি জানা ! যার চোখ আছে সেই ত দেখতে পায় । কিন্তু ওই চোথটাই যে সকলের থাকে না মৃণাল ! বলিয়া একটুখানি থামিয়া কহিলেন, আমি সবচেয়ে আশ্চৰ্য্য হয়ে গেছি এই দেখে মা, ভগবান কোথায়, কবে আর কি উপায়ে যে মানুষের যথার্থ আপনার জনটিকে মিলিয়ে দেন, তা কেউ জানে না । এর না আছে আড়ম্বর, না আছে কোন সম্পর্কের বালাই, না আছে সময়ের হিসাব! নিমেযে কোথা দিয়ে কি হয়ে যায়--কেবল বুক ভরে যখন তাকে পাই, তখনই মনে হয়, এতকাল এত বড় ফাকটা সয়েছিলুম কেমন করে ? মৃণাল আস্তে আস্তে বলিল, সে ঠিক কথা বাবা, নইলে তোমার একটা মেয়ে যে এই বনের মধ্যে ছিল, এতদিন ত তার কোন খোজ-খবর রাখোনি । কেদারবাবু কহিলেন, সাধ্য কি মা রাখি, তিনি যতদিন না হুকুম করেন। আবার হুকুম যখন দিলেন তখন কোথাও এতটুকু বাধল না, কিসে যেন হিড় হিড় করে টেনে নিয়ে এলো । আজ লোক দেখচে, এই ত কেবল একটা মাসের পরিচয় কিন্তু আমি জানি, এ ত শুধু আমার বাসা-ভাড়ার হিসাব নয় যে, পাজির পাতার সঙ্গে এর মাসকাবারি গণনার মিল হবে । এ যেন কত যুগ-যুগান্তকাল ধরে কেবল তোমার ३३३