পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দ্বাদশ সম্ভার).djvu/২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষের পরিচয় ফিরিবার সময়ে অস্তের চোখের অন্তরালে রেণুও আসিয়৷ মুম্বকণ্ঠে ঠিক এই মর্শ্বের অমুযোগ জানাইয়াছিল। তোমার বাবাকে বলতে ভূলো না যে, আমি সন্ধ্যার পরে কাল আবার জাসবো। আমার বড় দরকার। - আচ্ছা । কিন্তু চাকরদের বলে যাও । স্বতরাং ব্রজবাবুর নিজস্ব ভৃত্যটিকেও এ-কথা রাখাল বিশেষ করিয়া জানাইয়া আসিয়াছিল ; কিন্তু যথাসময়ে বাসায় পৌঁছিতে পারে নাই। আসিয়া দেখিল দরজার কড়ায় জড়ানো একটুকরো কাগজ, তাহাতে পেন্সিলে লেখা—আজ দেখা হলো না, কাল বৈকাল পাচটায় আসবো—ন-মা । - আজ সেই পাচটার আশাতেই দুই বন্ধুতে পথ চাহিয়া আছে ; কিন্তু এখনো তার মিনিট-কুড়ি বাকী। তারক তাগাদ দিয়া কহিল, যা হয়েচে ঢালো। তার আসবার আগে এ-সমস্ত পরিষ্কার করে ফেলা চাই । কেন ? মানুষে চা খায় এ কি তিনি জানেন না ? দেখে রাখাল, তর্ক কোরো না। মানুষে মানুষের অনেক কিছু জানে, তবু তার কাছেই অনেক কিছু সে আড়াল করে। গরু-বাছুরের এ প্রয়োজন হয় না। তা ছাড়া এ-গুলোই বা কি ? এই বলিয়া সে অ্যাশ-টুে সমেত সিগারেটের টিনট তুলিয়া ধরিল। বলিল, পৌরুষ করে এ-ও তাকে দেখাতে হবে নাকি ? রাখাল হাসিয়া ফেলিল—দেখে ফেললেও তোমার ভয় নেই তারক, অপরাধী যে কে তিনি বুঝতে পারবেন। তারক খোচাটা অনুভব করিল। বিরক্তি চাপিয়া বলিল, তাই আশা করি। তৰু আমাকে ভূল বুঝলেও ক্ষতি নেই, কিন্তু একদিন যাকে মাহ করে তুলেছিলেন তাকে বুঝাতে না পারলে তার অন্যায় হবে। রাখাল কিছুমাত্র রাগ করিল না, হাসিমুখে নিঃশব্দে চা ঢালিতে প্রবৃত্ত হইল। তারক চা থাইতে আরম্ভ করিয়া মিনিট-দুই পরে কহিল, হঠাৎ এমন চুপচাপ যে ? কি করি? তিনি আসবার আগে সেই নশ নিরানব্বইয়ের ধাক্কাটা মনে মনে একটু সামলে রাখচি ভাই, বলিয়া সে পুনশ্চ একটু হাসিল । শুনিয়া তারকের গা জলিয়া গেল। কিন্তু এবার সেও চুপ করিয়া রহিল। চা-খাওয়া সমাপ্ত হইলে সমস্ত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করিয়া দুজনে প্রস্তুত হইয়া রহিল। ঘড়িতে পাচটা বাজিল। ক্রমশঃ পাচ, দশ, পনেরো মিনিট অতিক্রম করিয়া ঘড়ির কাটা নীচের দিকে ঝুলিয়া পড়িতে লাগিল। কিন্তু তাহার দেখা নাই। উন্মুখ অধীরতায় সমস্ত ঘরটা যে ভিতরে ভিতরে কন্টকিতৃ হুইয়া উঠিয়াছে, তাহা প্রকাশ ఫి