পাতা:বিশ্বকোষ সপ্তম খণ্ড.djvu/৩৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হইয়া পড়ে, সুতরাং চতুর্দিকস্থ বায়ু ঐ স্থানে ধাবিত হইয়া ঝড় উৎপন্ন করে। এই শেষোক্ত মতই ঈষৎ পরিবৰ্ত্তিত হইয়া এখন সৰ্ব্বত্র গৃহীত হইয়াছে । বহুবিধ পরীক্ষা দ্বারা পণ্ডিতগণ এই সিদ্ধান্তে উপনীত হইয়াছেন, যে যে স্থানে বায়ুরাশির চাপ হ্রাস হয়, চতুর্দিকস্থ অধিক চাপযুক্ত স্থান হইতে ঐ অল্প চাপযুক্ত ভূভাগে বায়ুর গতি হইয়া থাকে। যদি চতুৰ্দ্দিকৃস্থ বায়ুরাশির চাপ অল্পে অল্পে বৃদ্ধি পায়, তাহ হইলে বায়ুপ্রবাহ ধীরে ধীরে গমন করে, আর যদি নিকটেই অধিক চাপযুক্ত প্রদেশ থাকে, তাহ হইলে বায়ুরাশি বেগে ধাবিত হয়। কোথাও ইহার ব্যতিক্রম দৃষ্ট হয় না। কোন शश्न दाबूगानषप्श (Barometer) *ाबटनद्र অবনতি দেখিলে সেই সময় যদি পাশ্বধৰ্ত্তী দেশসমূহে উহার উন্নতি হইয়া থাকে, তাহা হইলে বুঝিতে হুইবে শীঘ্রই ঝড়ের সম্ভাবনা । নাবিকগণ এই উপায়েই ঝড় প্রভৃতি পূৰ্ব্বে জানিতে পারিয়া সাবধান হয় এবং অনেক দুর্ঘটনার হস্ত হইতে পরিত্রাণ পায়। যে সকল সমুদ্রে প্রায় ঝড় বৃষ্টি হইয়া থাকে, ঐ সকল সমুদ্র দিয়া নিরাপদে যাইতে হইলে অগ্রে বায়ুমান যন্ত্রে পারদের উন্নতি লক্ষ্য করা কৰ্ত্তব্য । পরীক্ষা দ্বারা প্রমাণিত হইয়াছে যে, গ্রীষ্মমণ্ডল বা তাহার নিকটবৰ্ত্তী স্থানে যখনই যন্ত্রস্থ পারদের অবনতি হইয়াছে, তখনই বড় হইয়াছে। কখন কথন পারদের এই অবনতি ২ং ইঞ্চ পৰ্য্যন্ত হইয়া থাকে । ঝড়ের কেন্দ্রস্থলেই অবনতি সৰ্ব্বাপেক্ষ অধিক । অনেকে বলেন, সমস্ত ঝড় একটা লম্ব কিংবা একপাশ্বে ঈষৎ হেলুনি মেরুদণ্ডের চতুর্দিকে আবর্তন করিতে করিতে গমন করে, এবং ঐ ঘূর্ণ জন্ত কেন্দ্রাপসারিণী শক্তি দ্বারা কেন্দ্র হইতে বায়ুরাশি পরিধির দিকে গমন করে, এজন্ত কেন্দ্রগুণে পারদের অবনতি এবং প্রান্তভাগে উন্নতি হয়। অনেকে ইহাতে আপত্তি দেখাইয়া বলেন, ঝড় ঠিক পুন: পুনঃ আবৰ্ত্তন করিতে করিতে গমন করে না, সকল সময়েই ইহার কেন্দ্রাভিমুখে ধাবিত হইবার প্রবৃত্তি দেখা যায়। র্তাহারা আরও বলেন যে, কেবল কেন্দ্রাপসারিণী শক্তিতে ঐ অবনতি উৎপন্ন হইলে উহার পরিমাণ অতি অল্প হইত ; কারণ যদি ঝড়ের ব্যাস ৪০০ মাইল হয় এবং বড় প্রাস্তভাগে ঘণ্টায় ৭০ মাইল বেগে প্রবাহিত হয়, তথাপি ইহার কেন্দ্রাপসারিণী শক্তি যন্ত্রস্থ পারদকে : , ইঞ্চির অধিক অবনত করিতে সমর্থ হইবে না। কিন্তু সচরাচর পূর্ণ এক ইঞ্চি বা ততোধিক অবনতি হইতে দেখা যায়। যাহা হউক ঝড়ের পূর্বে ও ঝড়ের সমকালে বায়ুরাশির চাপের অসমতাপ্রযুক্ত বায়ুমন-যন্ত্রন্থ পারদ ঘন ঘন স্পদিত ঝড় [' ७8२ ] বড় অর্থাৎ একবার উচ্চ ও একবার নীচ হইতে থাকে । তজ্জন্ত যন্ত্রস্থ পারদের এইরূপ অধিক স্পন্দন দেখিলেই বুঝিতে হইবে, একটা বড় অবশুম্ভাবী। ১৮৪ খৃঃ অৰে অক্টোবর মাসে চীনসাগরে যে ঝড়ে গোলকুও নামক রণতরী জলমগ্ন হয়, ঐ ঝড় আরম্ভ হইবার পূৰ্ব্বে ২৪ ঘণ্টাকাল বায়ুমানযন্ত্রস্থ পারদ স্পন্ধিত হইয়াছিল। অপর একটা জাহাজ এই ছুর্ঘটনা হইতে উদ্ধার পাইয়াছিল, তাহা হইতেই উল্লিখিত তালিকা পাওয়া গিয়াছে। ঝড় শেষ হইবার পূৰ্ব্বে যন্ত্রে পারদের উন্নতি দেখা যায়। পিডিংটন সাহেব বলেন, এই নিদর্শনই ঝড় তুফানে পতিত নাবিকগণের নিরাশ হৃদয়ে আশার সঞ্চার করিয়া থাকে । কোন কোন ঝড়ের সময় পারদের উন্নতি ও অবনতি অতি ধীরে ধীরে হইয়া থাকে, আবার কোন কোন ঝড়ের সময় অতি শীঘ্র শীঘ্র হয় । যত শীঘ্ৰ ঐ পরিবর্তন হয়, ঝড়ের প্রকোপও ততই অধিক হইয়া থাকে। ঝড়ের কেন্দ্র কোন স্থানে আসিবার ৩ হইতে ৬ ঘণ্টা পূৰ্ব্বে পারদ সহসা অবনত হইয় পড়ে। ঝড়ের প্রকোপ অনুসারে ঐ অবনতির তারতম্য হয় ; ঝড়ের বেগ অত্যন্ত অধিক হইলে ঐ অবনতি ২ং ইঞ্চিরও অধিক হয় অর্থাৎ যন্ত্রস্থ পারদ ২৯.৯ ইঞ্চি হইতে ২৬-৩০ ইঞ্চ পৰ্য্যন্ত নামিয়া পড়ে। ঝড়ের পূৰ্ব্বলক্ষণ। ঝড় আসিবার পূৰ্ব্বে বায়ু নিশ্চল থাকে, রূক্ষ্ম ও নিঃশ্বাস প্রশ্বাসে কষ্ট বোধ হয়। তাহার পর উচ্ছ,স্বলভাবে এক দিক্ হইতে অল্প অল্প বায়ু প্রবাহিত হয়। তাহার পর একঘণ্ট বা ততোধিককাল অসাধারণ শান্তভাব লক্ষিত হয় এবং তৎপরেই উক্ত দিক্ হইতেই প্রবল ঝড় বহিতে থাকে। ঝড়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রায়ই বিদ্যুৎ, বজ্রাঘাত, মেঘ ও বৃষ্টি সংঘটিত হয়। ঝড়ের পূৰ্ব্বে তাপমানযন্ত্রে তাপের আধিক্য দেখা যায় ; ঝড় আসিলেই তাপ কমিয়া যায় এবং মেঘ ও বৃষ্টি হয় । ঝড়ের পর শীত অনুভব না হইয়া যদি পুনরায় গরম বোধ হয়, তবে বুঝিতে হইবে শীঘ্র আর একটা ঝড় হইবে। বৃহৎ বৃহৎ ঝড়ের সময় সমুদ্র উদ্বেলিত ও উচ্চ তরঙ্গাকারে কুলাভিমুখে বেগে ধাবিত হয় ও সময় সময় বহুদূর পর্যন্ত প্লাবিত করিয়া ফেলে। এই তরঙ্গ দুই প্রকার,— একটা তরঙ্গ সমগ্র ঘূর্ণবায়ু কর্তৃক বিতাড়িত হইয়। ইহার অগ্রে অগ্রে গমন করে, অপর তরঙ্গ ঘূর্ণবায়ুর চতুর্দিকস্থ ঝটিকাচক্রে নানাস্থানে নানাদিকে উৎপন্ন হইয়া থাকে । ভূমণ্ডলের কোন প্রদেশে কোন সময় কোনদিক হইতে বড় আইসে, তাহ এ পর্য্যস্ত নিঃসংশয়রূপে স্থিরীকৃত হয় মাই। পশ্চিমভারতীয়দ্বীপপুঞ্জে তথাকার বর্ষা শেষে সুৰ্য্য , যখন