জীবানন্দ। তার পরে?
এককড়ি। মহাবীর সিংকে সঙ্গে দিয়ে হুজুরের পালকী বেহারাদের পাঠিয়েটি তাকে ধরে আনতে।
জীবানন্দ। (মদ্যপান করিয়া) ঠিক হয়েচে। তােমাদের এখানে বােধ করি বিলিতি মদের দোকান নেই। তা না থাক্, যা আমার সঙ্গে আছে তাতেই একটা দিন চলে যাবে। কিন্তু আরও একটা কথা আছে এককড়ি।
এককড়ি। আজ্ঞে করুন?
জীবানন্দ। দেখ এককড়ি, আমি বিবাহ-হাঁ-বিবাহ আমি করিনি—বােধ হয় কখন করবও না। (একটু পরে) কিন্তু তাই বলে আমি ভীষ্মদেব-বলি মহাভারত পড়েচ ত? তার ভীষ্মদেব সেজেও বসিনি- শুকদেব হয়েও উঠিনি-বলি কথাটা বুঝলে ত এককড়ি? ওটা চাই!
জীবানন্দ। অপর সকলের মত যাকে তাকে দিয়ে এসব কথা বলাতে আমি ভালােবাসিনে, তাতে ঠকতে হয়। আচ্ছা এখন যাও।
এককড়ি। আমি তারাদাসকে দেখি গে। সে এর মধ্যে প্রজা বিগড়ে না দেয়।
জীবানন্দ। প্রজা বিগড়ে দেবে? আমি উপস্থিত থাকতে?
এককড়ি। হুজুর, পারে ওরা।
জীবানন্দ। তারাদাসকেই ত জানি, আবার ‘ওরা এল কারা?
এককড়ি। চক্কোত্তির মেয়ে ভৈরবী। নইলে চক্কোত্তিমশাই নিজে তত মন্দ লােক নয়; কিন্তু মেয়েটাই হচ্ছে আসল সর্বনাশী। দেশের যত বােম্বেটে বদমাসগুলাে হয়েচে যেন একেবারে তার গেলাম।
জীবানন্দ। বটে! কত বয়স? দেখতে কেমন?
এককড়ি। বয়স পচিশ-ছাব্বিশ হতে পারে। আর রূপের কথা যদি বলেন হুজুর ত সে যেন এক কাটখােট্টা সিপাই! না আছে মেয়েলি ছিরি, না আছে মেয়েলি ছাদ। যেন চুয়াড়, যেন হাতিয়ার বেঁধে লড়াই করতে চলচে। তাতেই ত দেশের ছােটলােক- গুলাে মনে করে গড়ের উনিই হচ্চেন সাক্ষাৎ চণ্ডী।
জীবানন্দ। (উৎসাহ ও কৌতুহলে সােজা উঠিয়া বসিয়া) বল কি এককড়ি? তৈরীর ব্যাপারটা কি খুলে বল ত শুনি?