পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (একাদশ সম্ভার).djvu/২২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চরিত্রহীন ধানম-রাজ্যের এই নূতন উৎপাতগুলি ঘোরময়ী সন্তয়ে লক্ষ্য করিয়া বলিতে লাগিলেন, এ বাড়িরই দোষ ! হারান আমার লিখে-পড়ে প্রাণটা দিলে, একেও দেখচি সেই রোগেই ধরেচে—ন বাপু পরের ছেলে— কিরণময়ী সমস্তই লক্ষ্য করিতেছিল, হাসিয়া কহিল, সে ভাবনা ক'রো না মা, উনি যে লেখাপড়ায় মন দিয়েচেন, তাতে পরমায়ু কমে না, বরং বাড়ে । ইহার কিছুদিন পরেই উক্ত চক্সোদয়ে বিষের ছুরি’ গল্প বাহির হইল। সূর্য্যোদয় পত্রিকা তাহার সমালোচনা করিয়া বলিলেন, বাঙালীর গৌরব, স্বপ্রসিদ্ধ নবীন লেখক শ্ৰীযুক্ত দিবাকর বন্দ্যোপাধ্যায় লিখিত একখানি প্রেমের নিখুত ছবি । অতঃপর এই নিখুত ছবিখানিতে কি কি আছে এবং সমালোচক মহাশয় কেমন করিয়া পড়িতে পড়িতে মশ্র সংবরণ করিতে পারেন নাই এবং এইরকম আর একখানি দেখিবার আশায় কিরূপ উদগ্রীব হইয়া আছেন, উপসংহারে সে আভাগও দিয়াছেন । এই নিলঞ্জ চাটুতাকে নিরপেক্ষ সত্য বলিয়া গ্রহণ করিতে দিবাকর তিলাং ইতস্ততঃ করিল না। তাহার কারণ এই যে, মানব-জীবনের যে সময়টায় আশা এবং আকাশকুমম কল্পনার মাতৃক্রোড় ছাড়িয়া পৃথক হইয়া দাড়ায় নাই, এটা তাহার সেই অবস্থা—প্রথম যৌবন । ইতিমধ্যেই সে দুই-চারিজম ভক্ত বন্ধু-বান্ধবের সাহায্যে সাহিত্যের জরির টুপি মাথায় পরিয়া বসিয়াছিল, স্বর্য্যোদয়ের সম্পাদক তাহারই চারিপাশে একছড়া পুথির মালা জড়াইয়া দিলেন। এই অপরূপ সাহিত্যের কিরীট মাথায় পরিয়া দিবাকর একদিন সকালে গৰ্ব্বোজ্জল মুখে রান্নাঘরে জাসিয়া উপস্থিত হইল। হাতে তাহার সেই ফুৰ্য্যোদয়’ কাগজখানা। ’ কহিল, বৌদি, বড় ব্যস্ত নাকি ? কিরণময়ী রাধিতেছিল, বলিল, না, আর ব্যস্ত নয় ভাই-প্রায় শেষ হ’লো। তোমার হাতে ও কাগজখানা কি ছোটুঠাকুরপো ? ও, এখানা ? এটা একটা মাসিকপত্র-‘হুর্য্যোদয়’—মৃত্তন বেরুচ্চে। কিন্তু ৰাই বল বোঁদি, লিখচে বেশ । কিরণময়ী সূর্ধ্যোদয়ে'র অস্তিত্বও অবগত ছিল না, আগ্রহ সহকারে বলিল, সত্যি ? তা হলে একবার দেখবো । এখনি দেখবে ? না এখন নয়—আমার বিছানায় রেখে দাও গে—দুপুরবেলা দেখব । দুপুরবেলা কাজ-কৰ্ণ খাওয়া-দাওয়া শেষ হইলে কিরণময়ী ‘বুৰ্য্যোদয় খুলিয়া বসিল । Նֆ*