পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ত্রয়োদশ সম্ভার).djvu/৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পথের দাবী নির্দেশ করিয়া দেখাইল । কহিল, আপনার বালিশের তলায় রেখে দিয়েচি । পকেট থেকে বাইরে পড়ে যায়নি এই ভাগ্যি। কি করিয়া যে পড়িয়া গিয়াছিল এই কথা ভাবিতে ভাবিতে অপূৰ্ব্ব তাহার ঘরে চলিয়া গেল । 6. রান্ত্রে আহারাদির পরে তেওয়ারী করজোড়ে সাশ্রনয়নে কহিল, আর নী ছোটবাবু, এইবার বুড়োমানুষের কথাটা রাখুন। চলুন, কাল সকালেই আমরা যেখানে হোক চলে যাই । অপূৰ্ব্ব কহিল, কাল সকালেই, কোথায় শুনি ? তুই কি ধৰ্ম্মশালায় গিয়ে থাকতে বলিস নাকি ? তেওয়ারী বলিল, এর চেয়ে সেও ভাল। মকদ্দমা জিতেচে, এইবার কোনদিন ঘরে ঢুকে আমাদের দু'জনকে মেরে যাবে ? অপূৰ্ব্ব আর সহিতে পারিল না, রাগ করিয়া কহিল, তোকে কি আমার কাটা ঘায়ে চুনের ছিটে দিতেই মা সঙ্গে দিয়েছিলেন ? তোকে আর আমার দরকার নেই ; কাল জাহাজ আছে, তুই বাড়ি চলে যা, আমার কপালে যা আছে তা হবে। তেওয়ারী আর তর্ক করিল না, আস্তে আস্তে শুইতে চলিয়া গেল। তাহার কথাগুলা অপূৰ্ব্বকে অপমানের একশেষ করিল বলিয়াই সে এরূপ কঠোর জবাব দিল, না হইলে সে যে বিশেষ অসঙ্গত কিছু কহে নাই অপূৰ্ব্ব মনে মনে তাহা অস্বীকার করিতে পারিল না। যাহা হৌক পরদিন সকাল হইতে একটা নূতন বাসার খোজ চলিতে লাগিল এবং শুধু তলওয়ারকর ছাড়া আফিসের প্রায় সকলকেই সে এই মর্শ্বে অনুরোধ করিয়া রাখিল । অতঃপর তেওয়ারীও অকুযোগ করিল না, অপুৰ্ব্বও মনের কথা প্রকাশ করিল না, কিন্তু প্ৰভু ও ভৃত্য উভয়েরই এক প্রকার সশঙ্কিত ভাবেই দিন কাটিতে লাগিল। আফিস হইতে ফিরিবার পথে অপূৰ্ব্ব প্রত্যহই ভয় করিত, জাজ না জানি কি গিয়া শুনিতে হয়! কিন্তু কোনদিন কিছুই শুনিতে হইল না । মকদ্দমাবিজয়ী জোসেফ পরিবারের নানাবিধ ও বিচিত্র উপদ্রব নব নব রূপে নিত্য প্রকাশ পাইবে ইহাই স্বাভাবিক, কিন্তু উৎপাত ত দুয়ের কথা, উপরে কেহ আছে কি-না অনেক সময় তাহাই সন্দেহ হইতে লাগিল । কিন্তু wo