পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ত্রয়োদশ সম্ভার).djvu/৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পথের দাবী কুড়িয়ে পকেটে রেখেচেন। দেখি বাবা তোমার হাতটি ? এই বলিয়া সেই প্রবীণ, স্বদক্ষ পুলিশ কর্মচারী মহাপাত্রের ডান হাতের অঙ্গুঠটি তুলিয়া ধরিয়া ক্ষণকাল পৰ্য্যবেক্ষণ করিয়া সহাস্তে কহিলেন, অনেক গাজা তৈরির চিহ্ন এইখানে বিদ্যমান বাব, বললেই পারতে খাই। কিন্তু ক'দিনই বা বাঁচবে,- এই ত তোমার দেহ,— আর খেয়ে না। বুড়োমামুষের কথাটা শুনে । মহাপাত্র মাথা নাড়িয়া অস্বীকার করিয়া বলিল, আঙ্গে না মাইরি খাইনে । তবে ইয়ার বন্ধু কেউ তৈরি করে দিতে বললেই দিই,—এই মাত্র । নইলে নিজে খাইনে । জগদীশবাবু চটিয়া উঠিয়া কহিলেন, দয়ার সাগর। পরকে সেজে দিই, নিজে খাইনে ! মিথ্যেবাদী কোথাকার । " + অপূৰ্ব্ব কহিল, বেলা হয়ে গেল, আমি তবে চললুম কাকাবাবু। নিমাইবাবু উঠিয় দাড়াইয়া বলিলেন, আচ্ছ, তুমি এখন যেতে পারো মহাপাত্র। কি বল জগদীশ, পারে ত ? জগদীশ সম্মতি জানাইলে কহিলেন, কিন্তু নিশ্চয় কিছুই বলা যায় না ভায়া, আমার মনে হয় এ শহরে আরও কিছুদিন নজর রাখা দরকার। রাত্রের মেল-ট্রেনটার প্রতি একটু দৃষ্টি রেখো, সে যে বৰ্ম্মায় এসেচে এ খবর সত্য । জগদীশ কহিলেন, তা হতে পারে, কিন্তু এই জানোয়ারটাকে ওয়াচ করবার দরকার নেই বড়বাৰু। নেবুর তেলের গন্ধে ব্যাটা গানাস্বদ্ধ লোকের মাথা ধরিয়ে দিলে ! বড়বাৰু হাসিতে লাগিলেন। অপূৰ্ব্ব পুলিশ-স্টেশন হইতে বাহির হইয়া আসিল এবং প্রায় তাহার সঙ্গে সঙ্গেই মহাপাত্র তাহার ভাঙা টিনের তোরঙ্গ ও চাটাই-জড়ানো ময়লা বিছানার বাণ্ডিল বগলে চাপিয়া ধীর মন্থর পদে উত্তর দিকের রাস্তা ধরিয়া সোজা প্রস্থান করিল। & 3