পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ত্রয়োদশ সম্ভার).djvu/২১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ミ8 নীপথের সমস্তক্ষণ ভারতীর মন কত-কি ভাবনাই ষে ভাবিতে লাগিল তাহার নির্দেশ নাই। অধিকাংশই এলো-মেলে—শুধু যে চিন্তাটা মাঝে মাঝে আসিয়া তাহাকে সব চেয়ে বেশি ধাক্কা দিয়া গেল সে সুমিত্রার ইতিবৃত্ত। তাহার প্রথম যৌবনের দুর্ভাগ্যময় অপরূপ কাহিনী । সুমিত্রাকে বন্ধু বলিয়া ভাবিবার দুঃসাহস কোন মেয়ের পক্ষেই সহজ নয়, তাহাকে ভালবাসিতে ভারতী পারে নাই, কিন্তু সৰ্ব্ব বিষয়ে তাহার অসাধারণ শ্রেষ্ঠতার জন্য হৃদয়ের গভীর ভক্তি তাহাকে অর্পণ করিয়াছিল। কিন্তু সেদিন যত অপরাধই অপূর্ব করিয়া থাক, নারী হইয়া অবলীলাক্রমে তাহাকে হত্যা করার আদেশ দেওয়ায় ভক্তি তাহার অপরিসীম ভয়ে রূপাস্তরিত হইয়া গিয়াছিল,বলির পণ্ড রক্ত-মাখা খড়েগর সম্মুখে যেমন করিয়া অভিভূত হইয়া পড়ে,—তেমনি । অপূৰ্ব্বকে ভারতী ষে কত ভালবাসিত মুমিত্রার তাহ অপরিজ্ঞাত ছিল না, ভালবাসা যে কি বস্তু, সেও তাহার অবিদিত নয়, তথাপি আর একজনের প্রাণাধিকের প্রাণদণ্ডাজ্ঞা দিতে নারী হইয়া নারীর তিলাদ্ধ বাধে নাই। বেদনার আগুনে বুকের ভিতরটা যখন তাহার এমনি করিয়া হু হু করিয়া জলিতে থাকিত, তখন সে আপনাকে আপনি এই বলিয়া বুঝাইত ষে কৰ্ত্তব্যের প্রতি এতবড় নিৰ্ম্মম নিষ্ঠা না থাকিলে পথেরদাবীর কত্ৰী করিত তাহাকে কে ? ষাহাদের নিজের জীবনের মূল্য নাই, রাজারে রাজার আইনে যে-সকল প্রাণ বাজেয়াপ্ত হইয়া গেছে তাহারা নির্ভর করিত তবে কিসে ? তাহার জন্ম, তাহার শিক্ষা, তাহার কৈশোর ও যৌবনের বিচিত্র ইতিহাস, তাহার আসক্তির অনতিবর্তনীয় দৃঢ় সংসক্তি তাহার কর্তব্যবোধ, তাহার পাষাণ হয়ে সকলের সঙ্গেই আজ ভারতী সঙ্গতি দেখিতে লাগিল । নারী বলিয়া তাহার বিরুদ্ধে ষে প্রচণ্ড অভিমান ভারতীর ছিল, আজ সে যেন আপনা আপনিই একেবারে বাহুল্য হইয়া গেল। আর তাহাকে সে নিজের স্বজাতি বলিয়া ভাবতেই পারিল না। আজ তাহার মনে হইল, মেহের দিক দিয়া, সুমিত্রার কাছে দাবী করিবার, ভিক্ষা জানাইবার মত পরিহাস পৃথিবীতে যেন আর দ্বিতীয় নাই । নৌকা ঘাটে আসিয়া লাগিতেই একজন গাছের আড়াল হইতে বাহির হইয়া আসিল । ডাক্তারের হাত ধরিয়া ভারতী নীচের সিড়িতে পা দিতে যাইতেছিল, হঠাৎ লোকটার প্রতি চোখ পড়িতেই সে সভয়ে পা তুলিয়া লইল । ভাক্তার মূছকণ্ঠে কছিলেন, ও আমাদের হীরা সিং, তোমাকে পৌঁছে দেবার জন্তে দাড়িয়ে আছে ? কেয়া সিংঙ্গী, খবর সব ভালো ? &ез ۹ سه ser