পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দশম সম্ভার).djvu/২১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হরিলক্ষ্মী ই দিদি, সে একেবারে অজ পাড়াগায়ে। না বুঝে কাল হয়ত কি বলতে কি বলে ফেলেচি, কিন্তু অসম্মান করার জন্তে—আমাকে আপনি যে দিবি করতে বলবেন দিদি— হরিলক্ষ্মী আশ্চৰ্য্য হইয়া কহিল, সে কি মেজবোঁ, তুমি তো আমাকে এমন কথাই বলনি । মেজবোঁ এ-কথার প্রত্যুত্তরে আর একটি কথাও কহিল না। কিন্তু আসি বলিয়া পুনশ্চ বিদায় লইয়া যখন সে ধীরে ধীরে বাহির হইয়া গেল, তখন কণ্ঠস্বর যেন তাহার অকস্মাৎ আর একরকম শুনাইল । রাজিতে শিবচরণ যখন কক্ষে প্রবেশ করিল তখন হরিলক্ষ্মী চুপ করিয়া গুইয়া ছিল, মেজবৌয়ের শেষের কথাগুলা আর স্মরণ ছিল না। দেহ অপেক্ষাকৃত মুস্থ, মনও শাস্ত প্রসন্ন ছিল । * শিবচরণ জিজ্ঞাসা করিল, কেমন আছ বড়বে ? লক্ষ্মী উঠিয়া বসিয়া কহিল, ভাল আছি। শিবচরণ কহিল, সকালের ব্যাপার জানো ত ? বাছাধনকে ডাকিয়ে এনে সকলের সামনে এমনি কড়কে দিয়েচি যে জন্মে ভুলবে না। আমি বেলপুরের শিবচরণ ! ই ! হরিলক্ষ্মী ভীত হইয়া কহিল, কাকে গো ? শিবচরণ কহিল, বিপনেকে। ডেকে বলে দিলাম, তোমার পরিবার আমার পরিবারের কাছে জাক করে তাকে অপমান করে যায়, এত বড় আম্পৰ্দ্ধা ! পাজি নচ্ছার, ছোটলোকের মেয়ে । তার স্তাড়া মাথায় ঘোল ঢেলে গাধার চড়িয়ে গায়ের বার করে দিতে পারি জানিস্ । হরিলক্ষ্মীর রোগরিই মুখ একেবারে ফ্যাকাশে হইয়া গেল—বল কি গো ! শিবচরণ নিজের বুকে তাল ঠুকিয়া সাপে বলিতে লাগিল, এগায়ে জজ বল, ম্যাজিস্ট্রেট বল, আর দারোগ পুলিশ বল, সব এই শৰ্ম্ম । এই শৰ্ম্ম । মরণ-কাঠি, জীবন-কাঠি এই হাতে। তুমি বল, কাল যদি না বিপনের বৌ এসে তোমার পা টেপে ত আমি লাটু চৌধুরীর ছেলেই নই। আমি— বিপিনের বধূকে সৰ্ব্বসমক্ষে অপমানিত ও লাঞ্ছিত করিবার বিবরণ ও ব্যথায় লাটু চৌধুরীর ছেলে অ-কথা কু-কথার আর শেষ রাখিল না। আর তাহারই সম্মুখে নির্নিমেষ-চক্ষুতে চাহিয়া হরিলক্ষ্মীর মনে হইতে লাগিল, ধরিত্রী বিধা হও । रै ख डै