পাতা:বিশ্বকোষ চতুর্দশ খণ্ড.djvu/১১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মনস 象 ইহাতে যদি বল সে অবস্থাতেও আত্মার প্রকাশ বা সত্তাদৰ্ত্তি থাকে, এ সিদ্ধান্তের প্রমাণ কি? প্রমাণ—স্বপ্তোখিত ও মুস্থিত ব্যক্তির মুপ্তিভঙ্গ ও মুচ্ছ ভঙ্গের অব্যবহিত পরেই অনুভব হয়, আমি মুস্থিত ছিলাম, কিছুই জানিতে পারি নাই। এই অনুভবের একদেশে যে “আমি’ ও ‘ছিলাম’ অংশ আছে, তাহাই তাৎকালিক আত্মসত্তার বা আত্মপ্রকাশ থাকার অমুমানক। তৎকালে যদি কোন প্রকার সত্তাক্ষর্তি না থাকিত, তাহা হইলে কদাচ জীবের ঐরূপ স্মরণাত্মক জ্ঞান উপস্থিত হইত না । পুৰ্ব্বানুভব জন্ত সংস্কারের বলেষ্ট স্মরণাত্মক জ্ঞান উদিত হয়। এ নিয়ম স্বীকার করিলে ইহা ও স্বীকার করতে হইবে যে, তখন আমি স্বাভাবিক প্রকাশে অবস্থিত ছিলাম। বিষয়ের অফুরণ,মনের অপ্রকাশ ও অজ্ঞান এ সকল তুল্য কথা । মন যে তৎকালে আত্ম প্রতিবিম্বগ্রহণে অক্ষম ছিল, বিষয়গ্রহণে বিরত ছিল, তাহ আর কেহ দেখে নাই, কেবল আত্মাই তাহ দেখিয়াছিল। মন এখন তমসাচ্ছন্ন, আত্মা তাদৃশ মনকে অর্থাৎ তমসাচ্ছন্ন মনকে দেখিয়াছিলেন বলিয়াই মুপ্তি বা মুছাভঙ্গের পর তাহ স্মরণ করিতে তিনি সমর্থ হন । মন আপনার সত্তাত্তি বজায় রাখিয়া অন্যকে প্রকাশ করে, একমাত্র মনের বলেই জীব সব্যাপার, মনের অভাবে নির্ব্যাপার, সুতরাং মনই আত্মা এ সকল কথা নিতান্ত ছেয়। আত্মা মন: দ্বারাই বিষয় গ্রহণ করেন, এইজন্স মনকে আত্মা বলিয়া ভ্রম হয়। ( সাংখ্যদ• ) মন কোথায় অবস্থিত ? মনের এই অবস্থিতিস্থান লইয়। শাস্ত্রকারদিগের বিভিন্ন মত দৃষ্ট হয়। কোন কোন পুরাণ ও তন্ত্ৰমতে—মনের স্থান ক্রযুগলের অভ্যস্তর। দেহব্যাপিনী ইড়া, পিঙ্গল ও সুষুম্ন। নামে তিনটী প্রধান নাডু আছে। এই নাড়ী ভিনটী নাভি, মতাস্তরে হৃদপিণ্ড হইতে উৎপন্ন হইয়া মুলাধারে গিয়াছে'। তথা হইতে ত্রিপারাক্রমে তিন দিকে উভয় পাশ্ব ও মধ্যাস্থি বা মেরুদও আশ্রয় করিয়া মস্তক পৰ্য্যন্ত আবৰ্ত্তিত হইয়াছে। ঐ তিন প্রধান নাড়ীয় অনেক শাখানাড়ী অাছে। তাহারও আবার অনেক প্রশাধ আছে, ফল সমস্ত শরীরট। প্রায় শিরা ব্যাপ্ত। অশ্বখপত্র দীর্ণ হইলে যেমন তাহা তত্ত্বময় দৃষ্ট হয়, সেইরূপ শরীর ও তত্ত্বময়, অর্থাং শিরাময় । উক্ত নাড়ীত্রয়ের মধ্যে মৃণালতন্তু অপেক্ষা ও স্বক্ষ রেহমৱ তস্থ গুচ্ছাকারে আছে। আশ্রয়ীভূত শিরার সহিত সেই সকল দেহ তত্ত্ব ব্রহ্মরন্ধের নিম্নে গিয়া শেষ হইয়াছে। ধে স্থানটাতে স্নেহময় তত্ত্বগুচ্ছ শেষ হইয়াছে, সেই স্থানটা এস্থিল অর্থাং গাইটযুক্ত। এই তত্ত্বগ্রন্থির বৃত্তভাগ আঞ্জ • לל ] l মনস্ চক্র ও উৰ্দ্ধভাগ সংগ্ৰায় চক্র । মন এই আজ্ঞাচক্রে অবস্থিত, এবং উইখানে থাকিয়াই আপনার কার্য্য করিয়া থাকে। মন যখন চিন্তাকাৰ্য্যে প্রবৃত্ত হয়, তখন মস্তকস্থিত সমুদয় স্নায়ুমণ্ডল স্পনিীত হইতে থাকে এবং চোক, মুখ, ক্র প্রভৃতি বিশেষ বিশেষ স্থান বিকৃত ও কুঞ্চিত হইয়া থাকে। এ বিষয়েও মতদ্বৈধ আছে। কেহ বলেন, মনের স্থান মস্তক নহে, মনের স্থান হৃদয়। হৃদয়া ভ্যন্তরে যে অপুপাকার মাংস খণ্ড আছে, অর্থাৎ যাহাকে হৃদপদ্ম বলে, সেই মাংস খণ্ডের উদরাকাশেই মনের বাসভূমি। তাহাদের অনুভব এই যে, মনুষ্য যে কিছু ধ্যান বা চিস্ত করে, তাহা হৃদয়ে রাথিয়াই করে এবং তাহাদের ধ্যেয় বস্তু সকল হৃদয়াকাশেই প্রতিবিধিত হয়। এই কারণে মন মস্তকে নহে, হৃদয়ে । নৈয়ায়িকদিগের মতে মন দ্রব্যপদাৰ্থ । “দ্রব্যং গুণাস্তথা কয় সামান্তং সবিশেষকম্। সমাবায়স্তথা ভাবাঃ পদাথাঃ সপ্ত কীৰ্ত্তিতঃ ॥* ক্ষিত্যপৃতেজো মরুদ্ধ্যেম কাল দিক দেহিনে মনঃ। দ্রব্যাণি ••••• ৷” ( ভাষাপরিচ্ছেদ ) নব্য-নৈয়ায়িকগণ প্রথমে জাগতিক পদার্থকে দ্রব্য, ও৭ কৰ্ম্ম, সামান্ত, বিশেষ, সমবায় ও অভাব এই সপ্তভাগে বিভাগ করিয়াছেন। তাহার মধ্যে ক্ষিতি,অপ, তেজঃ, মরুৎ, ব্যোম, কাল, দিকৃ, দেহ ও মন এই নয়ট দ্রব্য পদার্থ। সাংখ্যমতেও মন দ্রব্যপদার্থ। কেহ কেহ বলেন, ত্ৰিগুণাত্মিক। প্রকৃতি হইতে মনের উৎপত্তি, সুতরাং মন এ ব্যপদার্থ হইতে পারে না । মন যখন গুণোৎপন্ন, তখন উহ। দ্রব্যপদাৰ্থ নখে, গুণপদার্থ। সাংখ্য ইহার উত্তরে বলেন, প্রকৃতি গুণপদার্থ নহৈ, দ্রব্যপদার্থ। গ্রকৃতি পুরুষরূপ পশুকে বদ্ধ করে, এই জন্ত উহা গুণ নামে অভিহিত হইয়াছে । বাস্তবিক উহা গুণপধার্থ নহে, প্রকৃতি দ্রব্যপদার্থ, সুতরাং প্রকৃতি হইতে উৎপন্ন মন ও গুণপদার্থ নহে দ্র। পদার্থ। { সাংখ্যদর্শন দেথ । ] আত্মার মনঃসংযোগ হইতেই জ্ঞান হয়। পূৰ্ব্বেই বলিয়াছি, শব্দস্পর্শদি যে কিছু উপলব্ধি হয়, মনই তাহার প্রধান সহায় । মনঃসংযোগে নিম্নোক্ত প্রণালী অমুসারে জ্ঞান হইয়! থাকে আত্মা মনের সহিত, মন ইঞ্জিয়ের সহিত ও ঞ্জি বিষয়ের সহিত সম্বন্ধ হইলে জ্ঞান হয়। "ঙ মনঃসংযোগ এপ জ্ঞানসামান্তে কারণম্।।” (মুক্তাবলী) জ্ঞানসামাদ্যের প্রতি ত্বক্ এবং মন:সংযোগই প্রধান কারণ । বিষয়ের সহিত ইঞ্জিয়ের, ইঞ্জিয়ের সহিত মনের, এবং সৰ্ব্বশেষে মনের সহিত আত্মার সম্বন্ধ এত দ্রুত হয় যে,তাহ।