জন্যে আমার সম্মতি চায়।”
সুচরিতা কহিল, “না বাবা, এখন কিছুদিন থাক্।”
ললিতাকে তিনি নিষেধ করিবামাত্র সে যে তাহার ক্ষুব্ধ হৃদয়ের সমস্ত বেগ দমন করিয়া উঠিয়া চলিয়া গেল সেই ছবিটি পরেশের স্নেহপূর্ণ হৃদয়কে অত্যন্ত ক্লেশ দিতেছিল। তিনি জানিতেন, তাঁহার তেজস্বিনী কন্যার প্রতি সমাজ যে অন্যায় উৎপীড়ন করিতেছে সেই অন্যায়ে সে তেমন কষ্ট পায় নাই যেমন এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করিতে বাধা পাইয়া, বিশেষত পিতার নিকট হইতে বাধা পাইয়া। এইজন্য তিনি তাঁহার নিষেধ উঠাইয়া লইবার জন্য ব্যগ্র হইয়াছিলেন। তিনি কহিলেন, “কেন রাধে, এখন থাকবে কেন?”
সুচরিতা কহিল, “নইলে মা ভারি বিরক্ত হয়ে উঠবেন।”
পরেশ ভাবিয়া দেখিলেন সে কথা ঠিক।
সতীশ ঘরে ঢুকিয়া সুচরিতার কানে কানে কী কহিল। সুচরিতা কহিল, “না ভাই বক্তিয়ার, এখন না। কাল হবে।”
সতীশ বিমর্ষ হইয়া কহিল, “কাল যে আমার ইস্কুল আছে।”
পরেশ স্নেহহাস্য হাসিয়া কহিলেন, “কী সতীশ, কী চাই?”
সুচরিতা কহিল, “ওর একটা—"
সতীশ ব্যস্ত হইয়া উঠিয়া সুচরিতার মুখে হাত চাপা দিয়া কহিল, “না না, বোলো না, বোলো না।”
পরেশবাবু কহিলেন, “যদি গোপন কথা হয় তা হলে সুচরিতা বলবে কেন?”
সুচরিতা কহিল, “না বাবা, নিশ্চয় ওর ভারি ইচ্ছে যাতে এই গোপন কথাটা তোমার কানে ওঠে।”
সতীশ উচ্চৈঃস্বরে বলিয়া উঠিল, “কক্খনো না, নিশ্চয় না।”
বলিয়া সে দৌড় দিল।
বিনয় তাহার যে রচনার এত প্রশংসা করিয়াছিল সেই রচনাটা সুচরিতাকে দেখাইবার কথা ছিল। বলা বাহুল্য পরেশের সামনে সেই