পাতা:বিশ্বপরিচয়-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরমাণুলোক

বৈদ্যুতের স্বজাত ঠেলা-মার মেজাজ নিয়ে এই প্রোটনগুলো পরমাণুলোকের শান্তিরক্ষা করে কী ক’রে, দীর্ঘকাল ধরে এ প্রশ্নের ভালো জবাব পাওয়া গেল না। কেন্দ্রের বাইরে এদের ঝগড়া মেটে না, কেন্দ্রের ভিতরটাতে এদের মৈত্রী অটুট, এ একটা বিষম সমস্যা।

 এই রহস্যভেদের উপযোগী ক’রে যন্ত্রশক্তির বল বৃদ্ধি করা হোলো। পরমাণুর কেন্দ্রগত প্রোটন-লক্ষ্যের বিরুদ্ধে পরীক্ষকেরা হাঁ-ধর্মী বৈদ্যুতকণার দল লাগিয়ে দিলেন; যত জোরের বৈদ্যুতকণা তাদের ধাক্কা দিলে তার বেগ সেকেণ্ডে ৬৭২০ মাইল। তবু কেন্দ্রস্থিত প্রোটন আপন প্রোটনধর্ম রক্ষা করলে, আক্রমণকারী বৈদ্যুতের দলকে ছিটকিয়ে ফেললে। বৈদ্যুত তাড়নার জোর বাড়িয়ে দেওয়া হোলো। বিজ্ঞানী লাগালেন ধাক্কা ৭৭০০ মাইলের বেগে, শিকারটিকে হার মানাতে পারলেন না। অবশেষে ৮২০০ মাইলের তাড়া খেয়ে বিরুদ্ধ শক্তি নরম হবার লক্ষণ দেখালে। ছিটকোনো-শক্তির বেড়া ডিঙিয়ে আক্রমণশক্তি পৌছল কেন্দ্রদুর্গের মধ্যে। দেখা গেল দুটি সমধর্মী বৈদ্যুতকণা যত কাছে গিয়ে পৌঁছলে তাদের ঠেলাঠেলি যায় চুকে সে হচ্ছে এক ইঞ্চির বহু কোটি ভাগ ঘেঁষাঘেষিতে। তাহলে ধরে নিতে হবে ঐ নৈকট্যের মধ্যে প্রোটনদের পরস্পর ঠেলে ফেলার শক্তি যত তার চেয়ে প্রভূত বড়ো একটা শক্তি আছে, টেনে রাখবার শক্তি। ঐ শক্তি

৩৭