পাতা:বিশ্বপরিচয়-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিশ্বপরিচয়

ব’লে মনে হয়। গণিতশাস্ত্র নাক্ষত্রিক হিসাবটার উপর দিয়ে সংখ্যার যে ডিম পেড়ে চলে সে যেন পৃথিবীর বহুপ্রসূ কীটেরই নকলে।

 সাধারণত আমরা দূরত্ব গনি মাইল বা ক্রোশ হিসাবে, নক্ষত্রদের সম্বন্ধে তা করতে গেলে অঙ্কের বোঝা দুর্বহ হয়ে উঠবে। সূর্যই তোত আমাদের কাছ থেকে যথেষ্ট দূরে, তার চেয়ে বহু লক্ষগুণ দূরে আছে নক্ষত্রের দল, সংখ্যা দিয়ে তাদের দূরত্ব গোনা কড়ি দিয়ে হাজার হাজার মোহর গোেনার মতো। সংখ্যা-সংকেত বানিয়ে মানুষ লেখনের বোঝা হালকা করেছে, হাজার লিখতে তাকে হাজারটা দাঁড়ি কাটতে হয় না। কিন্তু জ্যোতিষ্কলোকের মাপ এ সংকেতে কুলোল না। তাই আর এক সংকেত বেরিয়েছে। তাকে বলা যায় আলোচলার মাপ। ৩৬৫ দিনের বছর হিসাবে সে চলে পাঁচ লক্ষ আটাশি হাজার কোটি মাইল। সূর্য প্রদক্ষিণের যেমন সৌর বছর তিনশো পঁয়ষট্টি দিনের পরিমাপে, তেমনি নক্ষত্রদের গতিবিধি, তাদের সীমাসরহদ্দের মাপ, আলো-চলা বছরের মাত্রা গণনা ক’রে। আমাদের নক্ষত্রজগতের ব্যাস আন্দাজ একলক্ষ আলো-বছরের মাপে। আরো অনেক লক্ষ নক্ষত্রজগৎ আছে এর বাইরে। সেই সব ভিন্ন গাঁয়ের নক্ষত্রদের মধ্যে একটির পরিচয় ফোটোগ্রাফে ধরা হয়েছে, হিসেবমতে সে প্রায় পঞ্চাশলক্ষ আলো-বছর দূরে। আমাদের নিকটতম

৪৮