পাতা:বিশ্বপরিচয়-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিশ্বপরিচয়

প্রদেশ ঘোর কালো, তার নাম আম্ব্রা; তার চারদিকে কম কালো বেষ্টনী, তার নাম পেনাম্ব্রা। এদের কালো দেখতে হয়েছে চারপাশের দীপ্তির তুলনায়,— সেই আলো যদি বন্ধ করা যেত তাহলে অতি তীব্র দেখা যেত এদের জ্যোতি। সূর্যের যে দাগ খুব বড়ো তার কোনো-কোনোটার আম্ব্রার এক পার থেকে আর এক পারের মাপ পঞ্চাশ হাজার মাইল, দেড় লক্ষ মাইল তার পেনাম্ব্রার মাপ।

 সূর্যের এইসব দাগের কমা-বাড়ার প্রভাব পৃথিবীর উপরে নানারকমে কাজ করে। যেমন আমাদের আবহাওয়ায়। প্রায় এগারো বছরের পালাক্রমে সূর্যের দাগ বাড়ে কমে। পরীক্ষায় দেখা গেছে বনস্পতির গুড়ির মধ্যে এই দাগি বৎসরের সাক্ষ্য আঁকা পড়ে। বড়ো গাছের গুড়ি কাটলে তার মধ্যে দেখা যায় প্রতি বৎসরের একটা করে চক্রচিহ্ন। এই চিহ্নগুলি কোনো কোনো জায়গায় ঘেঁষাঘেঁষি কোননা কোনো জায়গায় ফাঁকফাঁক। প্রত্যেক চক্রচিহ্ন থেকে বোঝা যায় গাছটা বৎসরে কতখানি করে বেড়েছে। আমেরিকায় এরিজোনার মরুপ্রায় প্রদেশে ডাক্তার ডগলাস দেখেছেন যে যে-বছরে সূর্যের কালো দাগ বেশি দেখা দিয়েছে সেই বছরে গুড়ির দাগটা চওড়া হয়েছে বেশি। এরিজোনার পাইন গাছে পাঁচশো বছরের চিহ্ন গুনতে গুনতে ১৬৫০ থেকে ১৭২৫ খ্রস্টাব্দ পর্যন্ত সূর্যের দাগের লক্ষণে একটা ফাঁক পড়ল।

৭৮