পাতা:বিশ্বপরিচয়-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিশ্বপরিচয়

কণা। যখন তাকে আর গুঁড়ো করা চলবে না তখন বলব এই অতিসূক্ষ্ম ধুলোই মাটির ঘরের আদিম মালমশলা। তেমনি করেই মানুষ একদিন ভেবেছিল, বিশ্বের পদার্থগুলিকে ভাগ করতে করতে যখন এমন সূক্ষ্ম এসে ঠেকবে যে তাকে আর ভাগ করা যাবে না তখন সেইটেকেই বলব বিশ্বের আদিভূত, অর্থাৎ গোড়াকার সামগ্রী। আমাদের শাস্ত্রে তাকে বলে পরমাণু, য়ুরোপীয় শাস্ত্রে বলে অ্যাটম। এরা এত সূক্ষ্ম যে দশকোটি পরমাণুকে পাশাপাশি সাজালে তার মাপ হবে এক ইঞ্চি মাত্র।

 সহজ উপায়ে ধুলোর কণাকে আর আমরা ভাগ করতে পারিনে কিন্তু বৈজ্ঞানিক তাড়নে বিশ্বের সকল সামগ্রীকে আরো অনেক বেশি সূক্ষ্ম নিয়ে যেতে পেরেছে। শেষকালে এসে ঠেকেছে বিরেনব্বইটা অমিশ্র পদার্থে। পণ্ডিতেরা বললেন এদেরই যোগ বিয়োগে জগতের যত কিছু জিনিস গড়া হয়েছে, এদের সীমান্ত পেরোবার জো নেই।

 মনে করা যাক, মাটির ঘরের এক অংশ তৈরি খাটি মাটি দিয়ে, আর এক অংশ মাটিতে গোবরে মিলিয়ে। তাহলে দেয়াল গুঁড়িয়ে দুরকম জিনিস পাওয়া যাবে, এক বিশুদ্ধ ধুলোর কণা, আর এক ধুলোর সঙ্গে মেশানো গোবরের গুড়ো। তেমনি বিশ্বের সব জিনিস পরখ ক’রে বিজ্ঞানীরা তাদের দুই শ্রেণীতে ভাগ করেছেন, এক ভাগের নাম মৌলিক,

১৮