পাতা:কাব্যগ্রন্থ (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চিত্রাঙ্গদা

হ’ল, যেন কার মুগ্ধ নয়নের দৃষ্টি
দশ অঙ্গুলির মত পরশ করিছে
রভস-লালসে মাের নিদ্রালস তনু।
চমকি’ উঠিমু জাগি'।

    দেখিনু, সন্ন্যাসী
পদপ্রান্তে নির্ণিমেষ দাঁড়ায়ে রয়েছে
স্থির প্রতিমূর্ত্তি সম। পূর্ব্বাচল হ'তে
ধীরে ধীরে সরে' এসে পশ্চিমে হেলিয়ে
দ্বাদশীর শশী সমস্ত হিমাংশুরাশি
দিয়াছে ঢালিয়া, ঙ্খলিতবসন মাের
অম্লাননূতন শুভ্র সৌন্দর্য্যের পরে।
পুষ্পগন্ধে পূর্ণ তরুতল; ঝিল্লিরবে
তন্দ্রামগ্ন-নিশীথিনী; স্বচ্ছ সরােবরে
অকম্পিত চন্দ্রকরচ্ছায়া; সুপ্ত বায়ু;
শিরে ল’য়ে জ্যোৎস্নলােকে মসৃণ চিক্কণ
রাশি রাশি অন্ধকার পল্লবের ভার
স্তম্ভিত অটবী। সেই মত চিত্রার্পিত
দাঁড়াইয়া দীর্ঘকায় বনস্পতিসম,
দণ্ডধারী ব্রহ্মচারী ছায়াসহচর।
প্রথম সে নিদ্রাভঙ্গে চারিদিক চেয়ে
মনে হ’ল, কবে কোন্ বিস্মৃত প্রদোষে
জীবন ত্যজিয়া, স্বপ্নজন্ম করিয়াছি

২৯