পাতা:চিঠিপত্র (প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

R সংগীতের স্বরসাধনায় ও কাব্যের ছন্দযোজনায় কবি যেমন বাধা পথ অনুসরণ করে চলেন নাই, সংসার-পরিচালনায়ও তেমনি সাধারণ স্থখস্বাচ্ছন্দ্যের বাধা পথ ধরে নিজেকে ও নিজের পরিবারকে চলতে দিতে চান নাই । কবিপত্নী ছেলেদের দামি পোশাক পরাতে গেলে কবি বোঝাতেন, বড়োমানুষির আওতায় থাকলে ছেলে মানুষ হয় না, অভ্যাসে তার গলদ জমে ওঠে অনেক । তোমার সন্তানরা খুব ভালো করে যাতে মানুষ হয় তারই চেষ্ট। করছি । শুনে কবিপত্নী খুশি হতেন, গৌরব অনুভব করতেন, কিন্তু মনে মনে লুকিয়ে থাকত ছেলেদের সুন্দর সুন্দর দামি পোশাকে সাজাবার সাধ । আশপাশের মানুষদের কাছে সেটি প্রকাশ হয়ে পড়ত দু-এক কথায় । তবে কার্যত তিনি স্বামীর আদর্শ ই অনুসরণ করে চলতেন । সাধারণ লোকদের সাদাসিধা অভ্যাসের সঙ্গে নিজেকে মেলাবার জন্ত কবি আগ্রহ প্রকাশ করতেন খুব— ন পারলে মনে কষ্ট পেতেন ও খেদ করতেন । নিজেকে ভেঙে গড়তে চাইতেন তাদের মতো অভ্যাসে অভ্যস্ত করার জন্য । বিদ্যালয়-স্থাপনার পরে ছাত্রদের মধ্যে থাকবেন বলে শান্তিনিকেতনের বর্তমান লাইব্রেরি-বাড়ির এক পাশের একটি ঘরে কবি বাস করেছেন অনেক দিন, খেতেন ছাত্রদের খাওয়ার সারে বসে— এক সঙ্গে একই খাদ্য । কবিপত্নী স্বভাবত অতিরিক্ত সাজসজ্জার আদেী অনুরাগী ছিলেন না, গহনা পরতেন নিতান্ত সামান্য । বড়ো ঘরের বেী, তার তুলনায় তিনি সাধারণ বেশেই থাকতে ভালোবাসতেন । উপরন্তু কবির উন্নত রুচির প্রভাব তাকে আরো সাদাসিধা করে তুলেছিল । বিলাস বর্জন, উপকরণ বর্জন একমাত্র বুলি ছিল সে সময় কবির মুখে । মেয়েদের কৃত্রিম উপায় অবলম্বনে রূপস্থষ্টি, চোখ-ধ7ধানে। রঙ-বেরঙের প্রজাপতি প্যাটার্নের সাজসজ্জা ও অলংকারবহুলতার আড়ম্বন্ধুে প্রতি ধিক্কার > 8 X