পাতা:চিঠিপত্র (প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

থাকে সকলেরই তাহা অনিষ্টকর হইবে— পরিবেশনে কাকিমার এই সন্দেহমুলক অভিপ্রায় গৃঢ় ছিল, তৎক্ষণাৎ বউমারা তাহা বুঝিতে পারিয়াছিলেন। সংকল্পভঞ্জন হইল, সন্দেহভঞ্জন হয় নাই। সন্দেহ দুরতিক্রম্য । বলেন্দ্রনাথের বিবাহে জননী প্রফুল্লময়ী দেবী ছোট জায়ের ভূয়সী প্রশংসা করিয়া লিখিয়াছিলেন– “বলুর বিবাহে খুব ঘটা হইয়াছিল।. আমার ছোট জা মৃণালিনী দেবীও সঙ্গে যোগ দিয়া নানারকম ভাবে সাহায্য করেন। তিনি আত্মীয়স্বজনকে সঙ্গে লইয়া আমোদ-আহলাদ করিতে ভালবাসিতেন। মনটা খুব সরল ছিল, সেইজন্য বাড়ির সকলেই তাকে খুব ভালোবাসিতেন।” পুত্রকন্যাগণের শিক্ষার্থ গৃহবিদ্যালয়ের পত্তন করিয়া কবি যখন শিলাইদহের কুঠিবাড়িতে সপরিবারে বাস করিয়াছিলেন, সেই সময়ে মিষ্টান্ন প্রস্তুত করিয়া মৃণালিনী দেবী কর্মচারীদিগের জন্য জমিদারি কাছারিতে পাঠাইয়া দিতেন । কখনো কোনো কোনো বিশিষ্ট কর্মচারীকে নিমন্ত্রণ করিয়া কুঠিবাড়িতে খাওয়াইতেন। স্বভাব অব্যভিচারী। বন্ধুবান্ধব লইয়া খাওয়াদাওয়ার আমোদ কবির স্বভাবে ছিল বড় কম না । একদিন প্রিয়বন্ধু প্রিয়নাথ সেনকে কবি মধ্যাহ্নভোজনের নিমন্ত্রণ করিয়াছিলেন । যে কারণেই হউক তিনি যে কেবল পত্নীকে এ কথা বলিতে ভুলিয়াছিলেন তাহা নয়, মধ্যাহ্নভোজনকালে তাহারও এ কথা স্মরণ হয় নাই । যথাকালে পরিবারবর্গের সকলের খাওয়াদাওয়া শেষ হইল । ভোজনান্তে কবি নিজকক্ষে বিশ্রাম করিতেছেন, এমন সময়ে বন্ধুর নিমন্ত্রণ রক্ষার্থ নিয়ন্ত্রিত প্রিয়নাথ কবির বিশ্রামভবনে প্রবেশ করিলেন । দেখিবণমাত্র আপনার বিষম ভ্রমের কথা কবির মনে হইল । বন্ধুকে অভ্যর্থনা করিয়া বসাইয়া পত্নীকে নিমন্ত্রিত বন্ধুর উপস্থিতি জানাইলেন । স্থিরবুদ্ধি কবিপত্নী বন্ধুর সহিত কথাপ্রসঙ্গে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করিতে বলিলেন । রন্ধনকুশল ক্ষিপ্ৰ হস্তে খাদ্য প্রস্তুত করিয়া কিছু মিষ্টান্ন আনাইলেন এবং ভোজনপাত্রে সাজাইয়া বন্ধুকে ভোজনগৃহে আনিবার জন্য কবিকে সংবাদ দিলেন । বন্ধুর >W)o