পাতা:চিঠিপত্র (প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

৩০

[শিলাইদহ। জুন ১৯০১]

ওঁ

ভাই ছুটি

 পুণ্যাহের গোলমাল চুকে যাওয়ার পর থেকে আমি লেখায় হাত দিয়েছি। একবার কোন সুযোগে লেখার মধ্যে পড়তে পারলেই আমি যেন ডাঙ্গায় তোলা মাছ জলে গিয়ে পড়ি। এখন এখানকার নির্জ্জনতা আমাকে সম্পূর্ণ আশ্রয় দান করেছে, সংসারের সমস্ত খুঁটিনাটি আমাকে আর স্পর্শ করতে পারচেনা, যারা আমার শত্রুতা করেছে তাদের আমি অতি সহজেই মার্জ্জনা করেছি। নির্জনতায় তোমাদের পীড়া দেয় কেন তা আমি বেশ বুঝ্‌তে পারচি— আমার এই ভাব সম্ভোগের অংশ তোমাদের যদি দিতে পারতুম তা হলে আমি ভারি খুসি হতুম, কিন্তু এ জিনিষ কাউকে দান করা যায় না। কলকাতার জনতা ছেড়ে হঠাৎ এখানকার মত শূন্যস্থানের মধ্যে এসে পড়ে প্রথম কিছুদিন নিশ্চয়ই তোমাদের ভাল লাগ্‌বেনা— এবং তার পরে সয়ে গেলেও ভিতরে ভিতরে একটা রুদ্ধ অধৈর্য্য থেকে যাবে। কিন্তু কি করি বল, কলকাতার ভিড়ে আমার জীবনটা নিষ্ফল হয়ে থাকে— সেই জন্যে মেজাজ বিগড়ে গিয়ে প্রত্যেক তুচ্ছ বিষয় নিয়ে আক্ষেপ করতে থাকি— সকলকে মনের সঙ্গে ক্ষমা করে বিরোধ ত্যাগ করে অন্তঃকরণের শান্তি রক্ষা করে চল্‌তে পারি নে। ছাড়া সেখানে রথীদের উপযুক্ত শিক্ষা কিছুতেই হয় না—

৫৪