পাতা:চিঠিপত্র (প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

১৭

[কলকাতা। ২৮ অগস্ট ১৮৯৯]

ওঁ

ভাই ছুটি

 নীতুরা পরের রোগদুঃখশোকতাপ সহ্য করতে পারে না— সে ওদের স্বভাব। সেজন্যে তুমি বিরক্ত হয়ে কি করবে। নবোঠানের এক ছেলে, সংসারের একমাত্র বন্ধন নষ্ট হয়েছে তবু তিনি টাকাকড়ি কেনাবেচা নিয়ে দিনরাত্রি যে রকম ব্যাপৃত হয়ে আছেন তাই দেখে সকলেই আশ্চর্য্য এবং বিরক্ত হয়ে গেছে— কিন্তু আমি মনুষ্যচরিত্রের বৈচিত্র্য আলোচনা করে সেটা শান্তভাবে গ্রহণ করতে চেষ্টা করচি— একএকসময় ধিক্কার হয় কিন্তু সেটা আমি কাটিয়ে উঠ্‌তে চাই। আমাদের বাইরে কে কি রকম ব্যবহার করচে সেটাকে নির্লিপ্তভাবে সুদূরভাবে দেখতে চেষ্টা করা উচিত। আমাদের শোকদুঃখ, বিরাগ অনুরাগ, ভাললাগা না লাগা, ক্ষুধাতৃষ্ণা, সংসারের কাজকর্ম্ম, সমস্তই আমাদের বাইরে;— আমাদের যথার্থ “আমি” এর মধ্যে নেই— এই বাইরের জিনিষকে বাইরের মত করে দেখতে পারলে তবেই আমাদের সাধনা সম্পূর্ণ হয়— সে খুব শক্ত বটে কিন্তু পদে পদে সেইটে মনে রেখে দেওয়া চাই। যখনি কাউকে খারাপ লাগে, যখনি কোন ঘটনায় মনে আঘাত পাওয়া যায় তখনি আপনাকে আপনার অমরত্ব স্মরণ করিয়ে দেওয়া চাই। একদিন রাত্রে বৈঠকখানায় ঘুমচ্ছিলুম সেই

৩২