পাতা:চিঠিপত্র (ত্রয়োদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কেন যে কি মনে করিয়া ভাণ্ডার সম্পাদন করিতে রাজি হইয়াছিলাম তাহা বুঝিতে পারি না। ইহাকেই বলে গ্রহ । হইল = হইয়াছে। করিল – করিয়াছে। ইত্যাদি । গিল— গিয়াছে হইতে পারিত । যখন কথাটা “গেল” তখন “গিয়াছে” হইতেই হইবে এমন কথা নাই । এক সময় কথাটা ছিল “গইল” কিন্তু এখন আর তাহা নাই । এরূপ পরিবর্তনকে আমল না দিলে কথিত ও লিখিত ভাষার মধ্যে ব্যবধান ক্রমে অত্যধিক হইয়া উঠিবে। এক সময় লিখিত বাংলায় “অামারদিগের” কথা ব্যবহৃত হইত এখন তাহার স্থানে “আমাদের’ হইয়াছে। পূৰ্ব্বে লেখা হইত “করহ” এখন লেখা হয় “কর”— পূৰ্ব্বে লেখা হইত “করিহ” এখন লেখা হয় “করিয়ো”। এ বড় অধিক দিনের কথা নয়। ভাবিয়া দেখুন *নয়” কথাটা পূর্বে “নহে” ছাড়া অন্য কোনো আকারে ব্যবহৃত হইত না — এখন ছাপার অক্ষরে “নয়” সহ্য করিতেছেন কিরূপে ? ক্রমে ক্রমে একে একে ভাষাটাকে আধুনিক ব্যবহারের উপযোগী করিয়া অানিতে হইবে । Chaucer-এর ইংরেজি চিরদিন টেকে নাই । রামমোহন রায়ের ভাষাটা একবার পড়িয়া দেখিবেন । কিন্তু এ সব তর্ক মোকাবিলায় না হইলে ভাল করিয়া হয় না। শনিবারে আসিয়া পড়ুন না । ইতি ১৯শে জ্যৈষ্ঠ ১৩১২ ভবদীয় স্ত্রীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কাব্যগ্রন্থাবলী নিশ্চয় একসেট পাইবেন ।