পাতা:বাংলা শব্দতত্ত্ব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর -দ্বিতীয় সংস্করণ.pdf/১৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

'S२२ শব্দতত্ত্ব তিৰ্য্যকৃরূপে সহজরূপ হইতে অর্থের কিঞ্চিং ভিন্নতা ঘটে এরূপ দৃষ্টান্তও আছে। "হাত” শব্দকে নিজ্জীব পদার্থ সম্বন্ধে ব্যবহার কালে তাহাকে তিৰ্য্যক্ করিয়া লওয়া হইয়াছে, যেমন জামার হাতা, অথবা পাকশালার উপকরণ হাতা। “পা” শব্দের সম্বন্ধেও সেইরূপ “চৌকীর পায়৷ ” “পায়া ভারি” প্রভৃতি বিন্দ্রপসুচক বাক্যে মানুষের সম্বন্ধে “পায়া” শব্দের ব্যবহার দেখা যায়। সজীব প্রাণী সম্বন্ধে যাহা খুর, খাট প্রভৃতি সম্বন্ধে তাহাই খুর। কান শব্দ কলস প্রভৃতির সংস্রবে প্রয়োগ করিবার বেলা “কানা” হইয়াছে । “কাধা” শব্দও সেইরূপ । খাটি বাংলাভাষার বিশেষণ পদগুলি প্রায়ই হলন্ত নহে একথা রামমোহন রায় তাহার বাংলা ব্যাকরণে প্রথম নির্দেশ করিয়। গিয়াছেন । ংস্কৃত শবদ “কাণ” বাংলায় তাহা “কান|” । সংস্কৃত “খঞ্জ” বাংলায় খোড় । সংস্কৃত “অৰ্দ্ধ,” বাংলা আধা । শাদা, রাঙা, বাকা, কালা, খাদা, পাকা, কাচা, মিঠা ইত্যাদি বহুতর দৃষ্টান্ত আছে । “আলে।” বিশেষ্য, “আলো” বিশেষণ । “ফাক” বিশেষ্য “ফাকা” বিশেষণ । “মা” বিশেষ্য, “মায়া” ( মায়া মানুষ ) বিশেষণ । এই আকার প্রয়োগের দ্বারা বিশেষণ নিম্পন্ন করা ইহাও বাংলাভাষায় তিৰ্য্যকৃরূপের দৃষ্টান্ত বলিয়া গণ্য হইতে পারে । মারাঠিতে তিৰ্য্যকৃরূপে আকার ও একার দুই স্বরবর্ণের যেমন ব্যবহার দেখা যায় বাংলাতেও সেইরূপ দেখিতে পাই । তন্মধ্যে আকারের ব্যবহার বিশেষ কয়েকটি মাত্র শব্দে বদ্ধ হইয়া আছে ;