পাতা:শোধবোধ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম অঙ্ক
শােধ-বােধ
চতুর্থ দৃশ্য

 সতীশ। না, এ আর এক জনের জিনিষ, আমি তোকে দিতে পারবোনা।

 হরেন। অ্যাঁ, মিথ্যে কথা! আমি তোমাকে লজঞ্জুস্ আন্‌তে বলেছিলেম, তুমি সেই টাকায় তোড়া এনেছ—তাই বই কি, আরেকজনের জিনিষ বই কি।

 সতীশ। হরেন, লক্ষ্মী ভাই, তুই একটুখানি চুপ কর, চিঠিখানা শেষ করে’ ফেলি। কাল তোকে আমি অনেক লজঞ্জুস্ কিনে এনে দেব।

 হরেন। আচ্ছা, তুমি কি লিখ্‌চো, আমাকে দেখাও।

 সতীশ। আচ্ছা দেখাবো, আগে লেখাটা শেষ করি।

 হরেন। তবে আমিও লিখি। (শ্লেট লইয়া চীৎকাব স্বরে) ভয়ে আকার ভা,—

 সতীশ। চুপ চুপ, অত চীৎকার করিস্ নে!—আঃ থাম্ থাম্!

 হরেন। তবে আমাকে তোড়াটা দাও।

 সতীশ। আচ্ছা নে, কিন্তু খবরদার ছিঁড়িস নে!—ও কি ক’র্‌লি! যা বারণ ক’র্‌লেম, তাই, ফুলটা ছিঁড়ে ফেল্লি। এমন বদ ছেলেও তো দেখিনি! (তোড়া কাড়িয়া লইয়া চপেটাঘাত করিয়া) লক্ষ্মীছাড়া কোথাকার। যা এখান থেকে—যা ব’ল্‌চি! যা!

হরেনের চীৎকার স্বরে ক্রন্দন ও সতীশের সবেগে প্রস্থান।

 বিধু। সতীশ বুঝি হরেনকে কাঁদিয়েচে, দিদি টের পেলে সর্ব্বনাশ হবে। হরেন, বাপ আমার, কঁদিস নে, লক্ষ্মী আমার, সোনা আমার।

 হরেন। (সরোদনে) দাদা আমাকে মেরেচে।

 বিধু। আচ্ছা, চুপ কর, চুপ কব, আমি দাদাকে খুব করে’ মার্‌বো এখন।

[ ৫৯