পাতা:শোধবোধ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম অঙ্ক
শােধ-বােধ
প্রথম দৃশ্য

 চারু। ওঃ বুঝেছি, প্রাইভেট্ কামরায় বিচার হবে। নেলি, আমি তা’হ’লে তৈরি হ’য়ে আসিগে। তোর নাবার ঘরে টয়লেট ভিনিগাব আছে তো?

 নলিনী। আছে। (চারুর প্রস্থান) তোমার এ কী রকম দুর্ব্বুদ্ধি? আমার এলবাম নিয়ে—

 সতীশ। লক্ষ্মীছাড়ার দান লক্ষ্মীকে পৌছব না। যেটা যার যোগ্য নয়, সে জিনিষটা তার নয়, আমি এই বুঝি।

 নলিনী। আর বগলে করে’ যে নিয়ে যায়, সেটা যে তারই এই বা কোন্ শাস্ত্রে লেখে?

 সতীশ। তবে সত্যি কথাটা বলি। আমি যে ভীরু, বেশ জোরের সঙ্গে কিছুই দিতে পারিনে। সেই জন্যে দিয়ে লজ্জা পাই।

 নলিনী। তোমার এই এলবমের মধ্যে কম জোরের লক্ষণটা কী দেখ্‌লে? এ তো টকটকে লাল।

 সতীশ। লজ্জায় লাল। কতবাব মনে হ’য়েছিলো, এই এলবমের মধ্যে নিজের একখানা ছবি পূরে দিই, “আমাকে মনে বেখো” এই করুণ দাবীটুকু বোঝাবার জন্যে। কিন্তু ভয় হ’লো, তুমি মনে ক’র্‌বে ওটা আমার স্পর্ধা, খালি রেখে দিলুম, তুমি নিজে ইচ্ছে করে’ যার ছবি রাখ্‌বে, ওর মধ্যে তারি স্থান থাক্।

 নলিনী। খুব ভালো ব’লচো, সতীশ, ইচ্ছে ক’র্‌চে বইয়ে লিখে রাখি।

 সতীশ। ঠাট্টা কোরো না।

 নলিনী। আমার আর-এক জনের কথা মনে প’ড়্‌চে। সে দিয়েছিলো একখানা খাতা—তোমার এল্‌বমের মধ্যে যে-কথাটা না-লেখা

[১১