পাতা:শোধবোধ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম অঙ্ক
শােধ-বােধ
পঞ্চম দৃশ্য

 শশধর। সতীশ, অমন উতলা হ’য়ো না। ব্যাপারটা কী বলো! হরেনকে কার হাত থেকে রক্ষা ক’রবার জন্য ডেকেছিলে?

 সতীশ। আমার হাত থেকে (পিস্তল দেখাইয়া) এই দেখ এই দেখ—মেসোমশায়।

দ্রুতপদে বিধুমুখীর প্রবেশ

 বিধু। সতীশ, তুই কোথায় কী সর্ব্বনাশ করে’ এসেছিস্ বল দেখি! আপিসের সাহেব পুলিস সঙ্গে নিয়ে আমাদের বাড়িতে খানাতল্লাসি ক’রতে এসেচে। যদি পালাতে হয়, এই বেলা পালা! হায় ভগবান্! আমি তো কোনো পাপ করিনি, আমারি অদৃষ্টে এত দুঃখ ঘটে কেন?

 সতীশ। ভয় নেই—পালাবার উপায় আমার হাতেই আছে।

 শশধর। তবে কী তুমি—

 সতীশ। তাই বটে মেসোমশায়, যা সন্দেহ ক’রেচো, তাই। আমি চুরি করে’ মাসির ঋণ শোধ ক’রেচি। আমি চোর। মা তুমি শুনে খুসী হবে, আমি চোর, আমি খুনী! তোমার কীর্ত্তি পূরো হ’লো। এখন আর কাঁদ্‌তে হবে না—যাও তুমি, যাও তুমি, যাও যাও, আমার সম্মুখ থেকে যাও। আমার অসহ্য় বোধ হচ্ছে।

 শশধর। সতীশ, তুমি আমার কাছেও তো কিছু ঋণী আছ, তাই শোধ করে’ যাও।

 সতীশ। বলো, কেমন করে’ শোধ ক’র্‌বো। কী আমি দিতে পারি। কী চাও তুমি!

[ ৭৫