পাতা:চয়নিকা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৪
চয়নিকা

তুমি তারি মাঝখানে কী মূর্তি আঁকিলে প্রাণে,
কী ললাট, কী নয়ন, কী শান্ত অধর।

সুগভীর কলধ্বনিময়
এ বিশ্বের রহস্য অকূল,
মাঝে তুমি শতদল ফুটেছিলে ঢলঢল,
তীরে আমি দাঁড়াইয়া সৌরভে আকুল!

পরিপূর্ণ পূর্ণিমার মাঝে
ঊর্ধ্ব মুখে চকোর যেমন
আকাশের ধারে ধায়, ছিঁড়িয়া দেখিতে চায়
অগাধ স্বপন-ছাওয়া জ্যোৎস্না-আবরণ,

তেমনি সভয়ে প্রাণ মোর
তুলিতে যাইত কতবার
একান্ত নিকটে গিয়ে সমস্ত হৃদয় দিয়ে
মধুর রহস্যময় সৌন্দর্য তোমার।

হৃদয়ের কাছাকাছি সেই
প্রেমের প্রথম আনাগোনা,
সেই হাতে হাতে ঠেকা, সেই আধ-চোখে দেখা
চুপি চুপি প্রাণের প্রথম জানাশোনা।

অজানিত, সকলি নূতন
অবশ চরণ টলমল,
কোথা পথ, কোথা নাই কোথা যেতে কোথা যাই,
কোথা হতে উঠে হাসি, কোথা অশ্রুজল।