পাতা:চিঠিপত্র (ত্রয়োদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের বস্তুরাজ্যে র্তাহার ইচ্ছাকে আমরা নিয়মরূপে দেখি— কিন্তু কেৰলি যে জগতে নিয়মকে দেখি তাহার বেশি কিছুই দেখি না তাহা নহে । পয়ারে চোদ্দ অক্ষরের নড়চড় হইবার জো নাই— তাহার ভাষা ছন্দ ও অর্থের সুবিহিত স্বসঙ্গতি আছে– কিন্তু আমরা যদি পয়ারে কেবল চোদ্দ অক্ষরই দেখিতাম অথবা কেবলই প্রত্যেক শব্দের ও পদের সহিত একটা যুক্তিসঙ্গত অর্থ আছে ইহাই জানিতাম তবে তাহাকে কাব্যই বলিতাম না । কিন্তু কাব্যের সমস্ত অটল অমোঘ শ্বলনহীন নিয়মের ভিতর দিয়াই তাহার গভীরতম সৌন্দৰ্য্য ও সঙ্গীত, কাব্যকৰ্ত্তার অন্তরতম আনন্দ ও প্রেম প্রকাশ পাইতেছে— সেইজন্যই তাহা কাব্য । আলঙ্কারিক তাহার মধ্যে অলঙ্কারশাস্ত্রের নিয়ম দেখিয়া বাহবা দেয়— বৈয়াকরণ তাহার মধ্যে ব্যাকরণের সূত্র ঠিকমত বজায় আছে দেখিয়া পুলকিত হয়, অভিধানবাগীশ তাহার শব্দ ও অর্থের সঙ্গতি দেখিয়া খুসি হইয়া নস্য লইতে থাকে— কিন্তু সমস্ত নিয়ম ও সঙ্গতির ভিতর হইতে নিয়ম ও সঙ্গতির অতীত আনন্দ তাহারাই দেখে যাহারা রসিক— তাহারা ইহার মধ্যে কবির নিয়মনৈপুণ্য দেখে না, কবির আনন্দউচ্ছাস দেখে । তাহারা যখন জগৎকে দেখে তখন বৈজ্ঞানিকের মত কেবল সত্যকেই দেখে না— দার্শনিকের মত চিত্তকেও দেখে, এবং কবির মত আনন্দকে দেখে— কারণ তাহার নিজের মধ্যে সত্য আছে, চিত্ত আছে, আনন্দ আছে– তাহার মধ্যে কাৰ্য্যকারণ শৃঙ্খলসঙ্গত নিয়মবন্ধনও আছে, চেতনাময় গতিশক্তিও আছে এবং

  • Հ