পাতা:চয়নিকা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চয়নিকা
৯৭

সুখবিভাবরী। অধর কী সুধাদানে
রহিবে উন্মুখ, পরিপূর্ণ বাণীভরে
নিশ্চল নীরব। লাবণ্যের থরে থরে
অঙ্গখানি কী করিয়া মুকুলি বিকশি’
অনিবার সৌন্দর্যেতে উঠিবে উচ্ছ্বসি
নিঃসহ যৌবনে।

জানি, আমি জানি, সখি,
যদি আমাদের দোঁহে হয় চোখোচোখি
সেই পরজন্ম-পথে,—দাঁড়াব থমকি,
নিদ্রিত অতীত কাঁপি উঠিবে চমকি
লভিয়া চেতনা।—জানি মনে হবে মম
চির-জীবনের মোর ধ্রুবতারাসম
চির-পরিচয় ভরা ঐ কালো চোখ।
আমার নয়ন হতে লইয়া আলোক,
আমার অন্তর হতে লইয়া বাসনা,
আমার গোপন প্রেম করেছে রচনা
এই মুখখানি। তুমিও কি মনে মনে
চিনিবে আমারে। আমাদের দুইজনে
হবে কি মিলন। দুটি বাহু দিয়ে বালা
কখনো কি এই কণ্ঠে পরাইবে মালা
বসন্তের ফুলে। কখনো কি বক্ষ ভরি
নিবিড় বন্ধনে, তোমারে, হৃদয়েশ্বরী,
পারিব বাঁধিতে। পরশে পরশে দোঁহে
করি বিনিময়, মরিব মধুর মোহে
দেহের দুয়ারে। জীবনের প্রতিদিন
তোমার আলোক পাবে বিচ্ছেদবিহীন,
জীবনের প্রতিরাত্রি হবে সুমধুর