পাতা:পথ ও পথের প্রান্তে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ہ/ع তাকে কোনো শান-বাধানে পাকা সাহিত্যিক রাস্তায় প্রকাশ করবার উপায় নেই। পত্রধারার তৃতীয় পর্যায়ের নাম দেওয়া হয়েছে “পথে ও পথের প্রান্তে ।” তার একটু ইতিহাস আছে। সেবার যখন ১৯২৬ খ্ৰীষ্টাব্দে যুরোপ ভ্রমণে বেরিয়েছিলুম সেখানকার নানা দেশে আমার ডাক পড়েছিল। তখন অসুস্থদশায় রথীন্দ্রনাথ বন্দী ছিলেন বার্লিনে আরোগ্যশালায়। তাই আমার সাহচর্যের ভার পড়েছিল প্রশান্ত মহলানবিশের পরে, তার স্ত্রী রাণী ছিলেন র্তার সঙ্গে । সমস্ত ভার বিনা বাক্যে কখনো বা প্রবল বাক্যব্যয়ে তিনিই নিয়েছিলেন নিজের হাতে। ভ্রমণকালীন ব্যবস্থার কাজে পুরুষ দুজনের অঘটন-ঘটানো অপটুতা সংশোধন করে চলতে হয়েছিল তাকে । জিনিসপত্র বাধা ছাদ, গোছগাছ করা, বস্তুপুঞ্জ হিসাব করে রাখা, সামলিয়ে নিয়ে বেড়ানো, বিদেশী কতৃ মহলে নিম্পরোয়ায় অযথা বা যথোচিত দাবি দাওয়া করায় ঐ কয়েক মাসে রাণীর অসামান্ততার পরিচয় পাওয়া গেছে। নতুন নতুন রেলের কামরায়, জাহাজের ক্যাবিনে, হোটেলের প্রকোষ্ঠে, বারবার ব্যবস্থা পরিবতনের মধ্যে দিয়ে নতুন নতুন লোকের সঙ্গে ব্যবহার করে চলেছি ; তার নানা প্রকার অভাবনীয় সমস্তাসমাধানের ভার তার হাতে দিয়ে নিলজি নিশ্চিন্ত মনে অজস্র সেবাশুশ্রুষায় দিন কাটিয়েছিলেম। অবশেষে যুরোপে ভ্রমণের পালা শেষ করে যখন আমরা গ্রীসের বন্দর থেকে ঘরমুখে জাহাজে চড়ে বেরিয়ে পড়লুম তারা রয়ে গেলেন বিদেশে ।