পাতা:পথ ও পথের প্রান্তে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পথে ও পথের প্রান্তে ২৯ তখন সেইটেই তার পুরস্কার হয়। কেননা তার বাপমান্ধি যে-সংসারে সে ছিল সে সংসারে সে ছিল অকত৭—সে ংসারে তার অধিকার আংশিক ; তার দাম্পত্যের জগৎ তার আপনারি জগৎ । এই জন্ত্যে তার চোখের জল শুকোতে দেরি হয় না। যে-অতীতের সঙ্গে তার সম্বন্ধ অনেক অংশে বিচ্ছিন্ন হয়েছে,বতমানের তুলনায় সে অতীতের গৌরব কমে যায়, এইজন্তে তার আকর্ষণ শক্তিও ক্ষীণ হয়ে আসে । তখন, যা সে দিয়ে এসেছে তার পরিবতে যা সে পায় ত৷ বেশি বই কম হয় না । “ আমার চিঠি লেখার বয়স চলে গেছে । কলমের ভিতর দিয়ে কথা কইতে গেলে কথার প্রাণগত অনেকটা অংশ ফসকে যায়। যখন মনের শক্তি প্রচুর থাকে তখন বাদসাদ দিয়েও যথেষ্ট উদ্বত্ত থাকে। তাই তখন লেখার বকুনিতে অভাবের লক্ষণ দেখা যায় না। এখন বাণী সহজে বকুনিতে উছলে উঠতে বাধা পায়—তাই কলমের ডগায় কথার ধারা ক্ষীণ হয়ে আসে, বোধ হয় এইজন্যেই লেখবার দুঃখ স্বীকার করতে মন রাজি হয় না প্ৰ 9 ত৷ হোকগে, তবু তোমাকে একটা ভিতরকার কথা বলি। সময় অনুকুল নয়, নানা চিন্তা, নানা অভাব, নানা আঘাত, সংঘাত। ক্ষণে ক্ষণে অবসাদের ছায়া ঘনিয়ে আসে, একটা পীড়ার হাওয়া মনের একদিক থেকে আর একদিকে হুহু ক’রে বইতে থাকে। এমন সময় চমকে উঠে মনে পড়ে যায় যে এ ছায়াটা “আমি” ব’লে একটা রাহুর । সে রাহুটা সত্য ।